চলমান কথা

গত ১১ মে, ২০২০ আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের অনলাইন পরীক্ষার শুভ উদ্বোধন করেন প্রকৌশলী এ এম এম সাজ্জাদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এপিএসসিএল।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু; স্বপ্ন হলো সত্যি। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সাথে স্বপ্ন যাবে বাড়ি।

Showing posts with label অষ্টম শ্রেণি: সারমর্ম. Show all posts
Showing posts with label অষ্টম শ্রেণি: সারমর্ম. Show all posts

Monday, July 27, 2020

  আমার একার সুখ, সুখ নহে ভাই,
সকলের সুখ, সখা, সুখ শুধু তাই।
আমার একার আলো সে যে অন্ধকার
যদি না সবার অংশ আমি দিতে পাই।
সকলের সাথে বন্ধু সকলের সকলের সাথে,
যাইব কাহারে বলো ফেলিয়া পশ্চাতে?
ভাইটি আমার সে তো ভাইটি আমার।
নিয়ে যদি নাহি পারি হতে অগ্রসর,
সে আমার দুর্বলতা, শক্তি সে তো নয়।
সবাই আপন হেথা, কে আমার পর?
হৃদয়ের যোগ সে কি কভু ছিন্ন হয়?
এক সাথে বাঁচি আর এক সাথে মরি
এসো বন্ধু, এ জীবন মধুময় করি।

সারমর্ম: একাকীত্ব জীবনে কখনোই সুখ উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। সমগ্র মানবজাতিই পরস্পর আত্মার নিবিড় বন্ধনে আবব্ধ। সুতরা সবাই মিলে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নেয়ার মধ্যেই প্রকৃত সুখ নিহিত। 

এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান; 
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসসতুপ-পিঠে
চলে যেতে হবে আমাদের।
চলে যাবো-তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাবো জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি-
নব জাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।

সারমর্ম: পৃথিবীর মানুষকে তাদেও জীবনের ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে সরে যেতে হবে। স্থান ছেড়ে দিতে হবে নবাগত শিশুদের জন্যে। যাবার আগে তাদের পুরাতন পৃথিবীর জঞ্জাল পরিষ্কার কওে নবাগত শিশুদের বাসযোগ্য করে যেতে হবে-এ আমাদের কর্তব্য।

 মহাজ্ঞানী মহাজন, যে পথে করে গমন, 
হয়েছেন প্রাতঃস্মরণীয়,
সেই পথ লক্ষ্য করে, স্বীয় কীর্তি ধ্বজা ধরে,
আমরাও হব বরণীয়।
সময় সাগর তীরে, পদাঙ্ক অঙ্কিত করে,
আমরাও হব অমর
সেই চিহ্ন লক্ষ্য করে, অন্য কোন জন পরে,
যশ্বোধারে আসিবে সত্বর।
করো না মানবগণ, বৃথা ক্ষয় এ জীবন,
সংসার সমরাঙ্গন মাঝে,
সংকল্প করেছ যাহা, সাধন করহ তাহা,
ব্রতী হয়ে নিজ নিজ কাজে।

সারমর্ম: জ্ঞানী-গুণীজন আমাদের কাছে অনুসরণী। তাঁরা যে পথ অনুসরণ করে জীবরে বড় হয়েছেন আমাদেরও সেই পথ অনুসরণ করা উচিত। এ-সংক্ষিপ্ত জীবনে বৃথা সময় নষ্ট না করে তাঁদের মতো অবিরাম কাজে লেগে থাকলেই পৃথিবীতে অমরকীর্তি রেখে যাওয়া সম্ভব।
বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র
নানাভাবে নতুন জিনিস শিখছি দিবারাত্র
এই পৃথিবীর বিরাট খাতায়
শিখছি সেসব কৌতুহলে সন্দেহ নেই মাত্র।

সারমর্ম: বিশ্বের বিচিত্র উৎস থেকে মানুষ প্রতিনিয়ত শিক্ষা লাভ করে। বিশাল প্রকৃতি রাজ্য থেকে অর্জিত হয় মানুষের বহুমুখী শিক্ষা। পৃথিবীর প্রতিটি অধ্যয় থেকে মানুষের অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের সুযোগ রয়েছে। প্রতিটি মানুষই প্রকৃতির ছাত্র হিসেবে প্রতিনিয়ত শিক্ষা গ্রহণ করছে। 

 পুণ্যে-পাপে দুঃখে-সুখে পতনে-উত্থানে, 
মানুষ হইতে দাও তোমার সন্তানে
হে স্নেহার্ত বঙ্গভূমি-তব গৃহক্রোড়ে,
চিরশিশু করে আর রাখিয়ো না ধ‘রে।
দেশদেশান্তরে-মাঝে তার সেথা স্থান,
খুঁজিয়া লইতে দাও করিয়া সন্ধান।
পদে পদে ছোট ছোট নিষেধের ডোরে,
বেঁধে বেঁধে বাখিয়ো না ভালো ছেলে করে।
প্রাণদিয়ে, দুঃখ সয়ে আপনার হাতে-
সংগ্রাম করিতে দাও ভালোমন্দ-সাথে।

সারমর্ম: চার দেয়ালের গণ্ডিবদ্ধ মানুষ বৃহৎ পৃথিবীতে খাপ-খাওয়াতে পারে না। ঘাত-প্রতিঘাতে বেড়ে ওঠা মানুষ পৃথিবীতে টিকে থাকার সামর্থ্য অর্জন করে। তাই প্রতিটি মানুষকে মুক্ত পরিবেশে বিচরণের মাধ্যমে নিজের অবস্থান নির্ধারিত করে নেওয়া উচিত।
সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে,
সার্থক জনম মাগো তোমায় ভালোবেসে।
  জানি নে তোর ধন-রতন আছে কিনা রাণীর মতন
  শুধু জানি আমার অঙ্গ জুড়ায় তোমার ছায়ায় এসে।
 কোন বনেতে জানি নে ফুল গন্ধে এমন করে আকুল,
 কোন গগনে উঠেরে চাঁদ এমন হাসি হেসে।
 আঁখি মেলে তোমার আলো প্রথম আমার চোখ জুড়ালো,
ওই আলোতেই নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে।

সারমর্ম: মানুষ যে দেশে জন্মগ্রহণ করে সেই দেশ তার সবচেয়ে প্রিয়। স্বদেশের মতো মহান ও প্রীতিময় স্থান জগতে বিরল।এখানে সকল কিছুর মধ্যেই সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে। মাতৃভূমির মতো এমন আপন অন্য কোথাও আছে বলে মনে হয় না। তাই এদেশের বুকে মৃত্যুবরণ করাটাও গৌরবের।

  ছোট ছোট বালু কণা, বিন্দু বিন্দু জল,
গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল।
মুহূর্তে নিমেষ কাল, তুচ্ছ পরিমাণ,
গড়ে যুগ যুগান্তর-অনন্ত মহান।
প্রত্যেক সামান্য ত্রুটি, ক্ষুদ্র অপরাধ,
ক্রমে টানে পাপ পথে, ঘটায় প্রমাদ।
প্রতি করুণার দান, স্নেহ পূর্ণ বাণী,
এ ধরার স্বর্গসুখ নিত্য দেয় আনি।

সারমর্ম: ক্ষুদ্র বস্তুর সমষ্টি থেকেই বৃহতের সৃষ্টি। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার মাধ্যমেই সাধিত হয় বৃহৎকর্ম। আবার ছোট ছোট অপরাধ মিলে বড় অপরাধ তৈরি হয়। সামান্য স্নেহ-করুণা। আর ভালোবাসা থেকে স্বর্গ সুখের জন্ম হয়। তাই সমান্য কোনো কিছুকেই তুচ্ছজ্ঞান করা উচিত নয়।
 বহু দিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে
   বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে
  দেখিতে গিয়াছি পর্বতমালা
 দেখিতে গিয়াছি সিন্ধু।
  দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
    ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
  একটি ধানের শীষের উপরে
 একটি শিশির বিন্দু।

সারমর্ম: মানুষ বহু অর্থ ও সময় ব্যয় করে দূরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে যায়। কিন্তু ঘরের কাছের সৌন্দর্যটুকু আর দেখা হয়ে ওঠে না। সৌন্দর্যের বিচিত্র সমারোহ মানুষের চারপাশে বিদ্যমান। তাই দূরে যাওয়ার আগে কাছের জিনিসও সবাইকে চিনতে জানতে হবে।
  
 বসুমতি, কেন তুমি তই কৃপণা?
 কত খোঁড়াখুঁড়ি করি পাই শস্যকণা।
  দিতে যদি হয় দে মা প্রসন্ন সহাস
     কেন এ মাথার ঘাম পায়েতে বহাস?
     বিনা চাষে শস্য দিলে কি তাহাতে ক্ষতি?
  শুনিয়া ঈষৎ হাসি কহে বসুমতি
  আমার গৌরব তাতে সামান্যই বাড়ে,
  তোমার গৌরব তাতে একেবারে ছাড়ে।

সারমর্ম: শ্রমলব্ধ সম্পদে গৌরব আছে, আছে আনন্দ আর শ্রমহীন প্রাপ্তিতে থাকে দুর্বলতা, থাকে অবসাদ। তাই সকলেরই উচিত পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবিকা অর্জন করা। কারণ, পরের দান গ্রহণে কোনো আত্মতৃপ্তি নেই, শ্রমেই সত্যিকারের গৌরব।

Friday, July 3, 2020

হে সূর্য! শতের সূর্য!
হিমশীতল সুদীর্ঘ রাত তোমার প্রতীক্ষায়
আমরা থাকি
যেমন প্রতীক্ষা করে থাকে কৃষকের চঞ্চল চোখ
ধানকাটার রোমাঞ্চকর দিনগুলির জন্যে।
হে সূর্য, তুমি তো জানো,
আমাদের গরম কাপড়ের কত অভাব!
সারারাত খড়কুঠো জ্বালিয়ে
এক টুকরো কাপড়ে কান ঢেকে,
কত কষ্টে আমরা শীত আটকাই!
সকালের এক টুকরো রোদ্দুরে-
এক টুকরো সোনার চেয়েও মনে হয় দামি।

সারমর্ম: সূর্যের শক্তিতে পৃথিবীর সব গাছপালা, মানুষ, প্রাণী জীবনধারন করে। আশ্রয়হীন, বস্ত্রহীন অসহায় মানুষ সূর্যের উত্তাপের জন্য সারারাত অপেক্ষা করে। সমাজের অবহেলিত ও সুবিধা-বঞ্চিত এসব মানুসের কাছে সূর্যের উত্তাপ সোনার চেয়েও দামি।

কোথায় স্বর্গ? কোথায় নরক? কে বলে তা বহুদূর?
মানুষের মাঝে স্বর্গ-নরক, মানুষেতেই সুরাসুর।
 রিপুর তাড়নে যখনি মোদের বিবেক পায় গো লয়,
 আত্মগ্লানির নরক অনলে তখনি পুড়িতে হয়।
প্রীতি ও প্রেমের পুণ্য বাঁধনে যবে মিলি পরস্পরে,
 স্বর্গ আসিয়া দাঁড়ায় তখন আমাদেরই কুঁড়েঘরে।

সারমর্ম: স্বর্গ ও নরকের অবস্থান দূরে নয় বরং খুব কাছেই। মানুষের মধ্যেই স্বর্গ-নরক রয়েছে। রিপুর তাড়নায় মানুষ বিবেকহীন আচরণে নরকের যন্ত্রণা সৃষ্টি করে। অন্যদিকে প্রীতিমুগ্ধ এবং কল্যাণময় আচরণ দারিদ্র্যের কুঁড়েঘরে স্বর্গীয় সুখ নিয়ে আসে। 
এই যে বিটপি-শ্রেণি হেরি সারি সারি-
কি আশ্চর্য শোভাময় যাই বলিহারি!
কেহ বা সরল সাধু-হৃদয় যেমন,
ফল-ভরে নত কেহ গুণীর মতন।
এদের স্বভাব ভালো মানবের চেয়ে,
ই”ছা যার দেখ জ্ঞানচক্ষে চেয়ে।
যখন মানবকূল ধনবান হয়,
তখন তাদের শির সমুন্নত রয়।
কিন্তু‘ ফলশালী হলে এই তরুগণ,
অহংকারে উ”চশির না করে কখন।
ফলশূন্য হলে সদা থাকে সমুন্নত,
নীচ প্রায় কার ঠাঁই নহে অবনত।

সারমর্ম: গাছ ফলে পরিপূর্ণ হয়ে নত হয়। তাতে তার গৌরব থাকলেও অহংকার থাকে না। মানুষ সম্পদশালী হলে অহংকারী হয়ে ওঠে; যা করা মোটেও উচিৎ নয়। ফলশূন্য গাছ মাথা সোজা করে দাড়িয়ে থাকে। কারো কাছে মাথা নত করে না। এ থেকে মানুষের শিক্ষা নেওয়া উচিৎ।

সাম্যের গান গাই-
আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই।
বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
বিশ্বে যা-কিছু এল পাপ-তাপ বেদনা অশ্রুবারি
অর্ধেক তার আনিয়াছে নর, অর্ধেক তার নারী।
জগতের যত বড় বড় জয় বড় বড় অভিযান
মাতা ভগ্নী ও বধূদের ত্যাগে হইয়াছে মহীয়ান।
কোন রণে কত খুন দিল নর, লেখা আছে ইতিহাসে,
কত নারী দিল সিঁথির সিঁদুর, লেখা নাই তার পাশে।
কত মাতা দিল হৃদয় উপাড়ি কত বোন দিল সেবা,
বীরের স্মৃতি-সতম্ভেও গায়ে লিখিয়া রেখেছে কেবা?
কোনো কালে একা হয়নি কো জয়ী পুরুষের তরবারি,
প্রেরণা দিয়াছে, শক্তি দিয়াছে বিজয়ী-লক্ষী নারী।

সারমর্ম: আদিকাল থেকে আজ পর্যন্ত সভ্যতার উন্নয়নে নারী-পুরুষের সমান অবদান রয়েছে। অথচ ইতিহাসে পুরুষের কথা যতটা আছে, নারীর কথা ততটা নেই। এখন সময় এসেছে সম-অধিকার দেওয়ার। সাবই মিলে একসাথে কাজ করতে হবে, তবেই জাতির সমৃদ্ধি আসবে।

সারমর্ম

                                 
নমঃ নমঃ নমঃ সুন্দরী মম জননী বঙ্গভূমি!
গঙ্গার তীর, স্নিগ্ধ সমীর, জীবন জুড়ালে তুমি।
অবারিত মাঠ, গগণললাট চুমে তব পদধূলি
ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড় ছোট ছোট গ্রামগুলি।
পল্লবঘন আম্রকানন রাখালের খেলাগেহ,
স্তব্ধ অতল দিঘি কালোজল-নিশীথ শীতল স্নেহ।
বুকভরা মধু বঙ্গের বধূ জল লয়ে যায় ঘরে-
মা বলিতে প্রাণ করে আনচান, চোখে আসে জল ভরে।

সারমর্ম: মা ও মাতৃভূমি সবার কাছে প্রিয়। বাংলাদেশ আমাদের মাতৃভূমি-এর আকাশ-বাতাস, নদী তীর, মাঠ-ঘাট, ফর ও ফুলের বাগান প্রকৃতি-নিসর্গ, মানুষ সবই আমাদের ভালোবাসার ধন।বাংলার আবহমান অপরূপ রূপে সকল বাঙালির মন আকৃষ্ট হয়।

ভদ্র মোরা, শান্ত বড়ো, পোষ-মানা এ প্রাণ
বোতাম-আঁটা জামার নিচে শান্তিতে শয়ান।
দেখা হরেই মিষ্ট অতি,
মুখের ভাব শিষ্ট অতি,
অলস দেহ ক্লিষ্ট গতি,
গৃহের প্রতি টান-
তৈল-ঢালা স্নিগ্ধ তনু নিদ্রা রসে ভরা
মাথায় ছোট বহরে বড় বাঙালি সন্তান।
ইহার চেযে হতাম যদি আরব বেদুইন,
চরণতলে বিশাল মরু দিগন্তে বিলীন।
ছুটছে ঘোড়া উড়ছে বালি,
জীবন স্রোত আকাশে ঢালি
হৃদয়-তলে বহ্নি জ্বালি চলেছে নিশিদিন-
বরশা হাতে, ভরসা প্রাণে,
সদাই নিরুদ্দেশ
মরুর ঝড় যেমন বহে সকল বাধা-হীন।

সারমর্ম: বাঙালি শান্তশিষ্ট, কর্মহীন, আরামপ্রিয় ও অলস জাতি। এ জীবন আমাদের কাম্য হতে পারে না। তার চেয়ে সাহসী, কর্মী ও চঞ্চলতা মুখর জীবনের অধিকারী হওয়া অনেক বেশি সম্মানের।