জ্ঞানহীন মানুষ পশুর সমান।
মূলভাব: মানুষের জীবনে সবচয়েে মূল্যবান জিনিস হল তার জ্ঞান। জ্ঞানহীন মানুষরে সাথে পশুর র্পাথক্য থাকে খুব সামান্যই।
সম্প্রসারতি ভাব: জৈবিক পরিচয়ে মানুষ শ্রেষ্ঠ প্রাণী। প্রাণের অস্তিত্ব হেতু মানুষের সাথে অন্যান্য ইতর প্রাণীর কোনো মৌলিক র্পাথক্য নেই। কিন্তু এ কথা সত্য, মানুষ সৃষ্টির সেরা। তার সম্মান আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে র্সবোচ্চ র্পযায়ে বিশ্বের অন্যান্য সমস্ত সৃষ্টিই মানুষের কল্যাণে নিবেদিত। মানুষও সব কিছুর ওপর প্রতিষ্ঠা করেছে তার আধিপত্য। ইতর প্রাণী থেকে মানুষের শ্নুরেষ্ষঠ হবার রহস্রেয কোথায়? বস্তুত মানুষ জ্ঞান শক্তির কল্যাণে সমগ্র বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরেছে জ্ঞান, বুদ্ধি, বিবেক ও মূল্যবোধের কারণে মানুষ নিজের জীবন নিজের চেষ্টায় সুন্দর করতে পারে। ভালোমন্দ, ন্যায়-অন্যায়, কল্যাণ-অকল্যাণ প্রভৃতির র্পাথক্য করে নিজের জীবন এবং দেশ ও জাতিকে কল্যাণময় করার ক্ষমতা কেবল মানুষেরই আছে। বুদ্ধিমান প্রাণী বলেই প্রাণী বলেই একদিকে মানুষের রয়েছে জ্ঞানশক্ত, অন্যদিকে রয়েছে মনুষ্যত্বের ছোঁয়ায় নৈতিক শক্তি। অথচ অন্যান্য প্রাণী জ্ঞানহীন বলে তাদের জীবন বিকাশ জৈবিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সুন্দর-অসুন্দর, ন্যায়-অন্যায়, সত্য-মিথ্যা এ সবের বালাই নেই পশুজীবনে। পশুরা ইন্দ্রিয় ও প্রানর্সবস্ব। খাওয়া আর অন্যান্য কর্মের মধ্যেই পশুর জীবন আর্বতিত। নিজেদের চেষ্টায়তারা তাদের জীবনকে চালাতে পারে না, করতে পারে না বিকশিত। ফলে তারা প্রাকৃতির ওপর নির্ভরশীল। কন্তিু পৃথিবীতে সকল মানুষ জন্মমাত্রই যে জ্ঞানবুদ্ধির অধিকারি তথা আশরাফুল মাখলুকাতরূপে শ্রেষ্ঠত্বের র্গব প্রাপ্য তা নয়। যে মানুষ যথাযথ পড়ালেখা, অভজ্ঞিতা ও মানবকি সাহর্চযে জ্ঞার্নাজনে র্ব্যথ হয়, র্ব্যথ হয় নৈতিক মূল্যবোধ গঠনে, সে মানুষ হয়েও পশুর র্পযায়ভুক্ত। সে ভালমন্দ, সুন্দর-অসুন্দর বলে কোনো কিছুর র্পাথক্য করতে পারে না। সৌজন্য ও নৈতিকতাও তার কাছে ধরা দেয় না। ফলে সে ইন্দ্রিয়পরায়ণ হয়ে পড়ে । মানবতার কল্যাণ চেতনা থেকে তারা হয় বঞ্চিত।
মন্তব্য: জ্ঞানহীন মানুষের দ্বারা কেউ উপকৃত হয় না। তার সঙ্গও কেউ কামনা করে না। তাই জীবনে জ্ঞানের সঞ্চয় করা দরকার।
আত্মশক্তি র্অজনই শক্ষিার উদ্দশ্যে।
মূলভাব: শক্ষিার প্রকৃত উদ্দশ্যেই হল আত্মশক্তি র্অজন করা। আত্মশক্তি র্অজন করা প্রতটিা মানুষরে র্কতব্য। যে ব্যক্তরি কোনো আত্মশক্তি নইে সে পরনর্ভিরশীল।
সম্প্রসারতি ভাব: মানুষের বিভিন্ন মানবীয় ও মহৎ গুনাবলরি মধ্যে আত্মশক্তি অন্যতম। কেউ আত্মশক্তিকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারে, আবার কেউ পারে না। আত্মশক্তির বলে মানুষ নিজের শক্তির উপর নির্ভরশীল হয়ে স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করতে ও কাজর্কম করতে পারে। আত্মশক্তি না থাকলে মানুষ নিজের উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। তখন সামান্য কাজেও তাকে অন্যের সাহায্যের অপেক্ষায় বসে থাকতে হয়। আত্মশক্তি মানুষের মাঝে গুপ্তধনের মতোই অজ্ঞাতভাবে থাকে। আত্মশক্তি মানুষের একটি সুপ্ত প্রতিভা। শিক্ষার মাধ্যমেই এটা একজন মানুষের অন্তরে পুরোপুরিভাবে বিকশিত হতে পারে। যে শিক্ষা মানুষকে তার আত্মপ্রত্যয়ে উজ্জীবতি করে না, সে শিক্ষা প্রকৃত শিক্ষা নয়। কারণ শিক্ষার উদ্দেশ্যই হচ্ছে মানুষের এ সুপ্ত প্রতিভাবে পুরোপুরিভাবে বিকশিত করা। শিক্ষা মানুষকে আত্মবশ্বিাস প্রসারে সাহায্য করে। আত্মবশ্বিাস আত্মশক্তিরই নামান্তর। মানুষকে সুন্দর, সমৃদ্ধি ও সুখী জীবন লাভ করার জন্য অন্যকে দুঃখকষ্ট সহ্য করতে হয়, অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয় এবং অনেক প্রতিকূল অবস্থার সঙ্গে সংগ্রাম করতে হয়। আত্মশক্তি না থাকলে মানুষ এ সংগ্রামে বিজয়ী হতে পারে না। আত্মশক্তি দ্বারা মানুষ নিজের দোষ-গুণ, ভালােমন্দ বুঝতে পারে। নিজের ক্ষমতা সম্বন্ধে আস্থাশীল হয়, জীবনরে চরম ও পরম সত্য লাভ করতে সর্মথ হয়। নিজেকে বুঝতে, শিখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। শিক্ষাজীবনকে সুন্দর, সুচারু এবং আত্মনর্ভিরশীলরূপে গড়ে তোলে। জীবন র্সাথক হয়। হাদিসে আছে, যে শিক্ষা গ্রহণ করে, তার মৃত্যু নেই। মূলকথা হল, মানুষকে আত্মশক্তি র্অজন করতে হলে শিক্ষিত হতে হবে, শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। সুতারং শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ যাতে আত্মবশ্বিাসে বলীয়ান হয় সেদিকে লক্ষ রাখা প্রয়োজন। আর নিজেকে জানা, নিজের ক্ষমতা-অক্ষমতা, নিজের শক্তি-দুর্বলতা সম্বন্ধে সম্যক উপলব্ধি করতে পারা শিক্ষার উদ্দেশ্য।
মন্তব্য: আত্মশক্তি মানুষেরএকটি সুপ্ত প্রতিভা, শিক্ষার মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের অন্তরে যাতে আত্মশক্তি বিকশিত হয় সে ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। কারণ আত্মশক্তিহীন মানুষ পরমুখাপক্ষেী, যা কাম্য নয়।