চলমান কথা

গত ১১ মে, ২০২০ আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের অনলাইন পরীক্ষার শুভ উদ্বোধন করেন প্রকৌশলী এ এম এম সাজ্জাদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এপিএসসিএল।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু; স্বপ্ন হলো সত্যি। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সাথে স্বপ্ন যাবে বাড়ি।

Showing posts with label অষ্টম শ্রেণি: সারাংশ. Show all posts
Showing posts with label অষ্টম শ্রেণি: সারাংশ. Show all posts

Monday, July 27, 2020

মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ প্রাণী। জগতের অন্যান্য প্রাণীর সহিত মানুষের পার্থক্যের কারণ-মানুষ বিবেক ও বুদ্ধির অধিকারী। এই বিবেক, বদ্ধি ও জ্ঞান নাই বলিয়া আর সকল প্রাণী মানুষ অপেক্ষা নিকৃষ্ট। জ্ঞান ও মনুষ্যেত্বের উৎকর্ষ সাধন করিয়া মানুষ জগতের বুকে অক্ষয় কীর্তিস্থাপন করিয়াছে, জগতের কল্যাণ সাধন করিতেছে; পশুবল ও অর্থবল মানুষকে বড় বা মহৎ করিতে পারে না। মানুষ বড় হয় জ্ঞান ও মনুষ্যত্বের বিকাশে। জ্ঞান ও মনুষ্যত্বের প্রকৃতি বিকাশে জাতির জীবন উন্নত হয়। প্রকৃত মানুষই জাতীয় জীবনের প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়ন আনায়নে সক্ষম। 

সারাংশ: বিবেক, বুদ্ধি ও জ্ঞান আছে বলেই মানুষ জগতের অন্যান্য প্রাণী থেকে শ্রেষ্ঠ। পেশিশক্তি ও অর্থবল মানুষকে মহৎ করে না; মনুষ্যত্ব দিয়েই মানুষ বড় হয়। জ্ঞানী মানুষ সর্বদা জাতীয় উন্নয়ন ও পৃথিবীর মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করে।

মানুষের মূল্য কোথায়? চরিত্রে, মনুষ্যত্বে, জ্ঞানে ও কর্মে। বস্তুত চরিত্রবলেই মানুষের জীবনের যা কিছু শ্রেষ্ঠ, তা বুঝতে হবে। চরিত্র ছাড়া মানুষের গৌরব করবার আর কিছুই নেই। মানুষের শ্রদ্ধা যদি মানুষের প্রাপ্য হয়, মানুষ যদি মানুষকে শ্রদ্ধা করে, সে শুধু চরিত্রের জন্যই। অন্য কোন কারণে মানুষের মাথা মানুষের সামনে নত করার দরকার নেই। জগতে যেসকল মহাপুরুষ জন্মগ্রহণ করেছেন, তাঁদের গৌরবের মূল এই চরিত্রশক্তি। তুমি চরিত্রবান লোক, এ কথার অর্থ এই নয় যে, তুমি লম্পট নও। তুমি সত্যবাদী, বিনয়ী এবং জ্ঞানের প্রতি শ্রদ্ধা পোষণ কর; তুিম পরদুঃখকাতর, ন্যায়বান এবং মানুষের ন্যায় স্বাধীনতাপ্রিয় চরিত্র মানে এই।

সারাংশ: মানুষের প্রকৃত মূল্য তার মনুষ্যত্ব, জ্ঞান, ও চরিত্রে। চরিত্রবলে মানুষ শ্রদ্ধা, বক্তি ও সম্মান অর্জন করতে পারে। পৃথিবীর সকল মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের মূল চরিত্র। পরোপকারী, ন্যায়বান, সত্যবাদী, স্বাধীনতাপ্রিয় মানুষই চরিত্রবান।
স্বাধীন হবার জন্য যেমন সাধনার প্রয়োজন, তেমনি স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে প্রয়োজন সত্যনিষ্ঠা ও ন্যায়পরায়ণতার। সত্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধহীন জাতি যতই চেষ্টা করুক, তাদের আবেদন-নিবেদনে ফল হয় না। যে জাতির অধিকাংশ ব্যক্তি মিথ্যাচারী, সেখানে দু-চার জন সত্যনিষ্ঠকে বহু বিড়ম্বনা সহ্য করতে হবে। দুর্ভোগ পোহাতে হবে। কিন্তু মানুষ জাতি হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াতে হলে, সে কষ্ট সহ্য না করে উপায় নেই।

সারাংশ: বহু সাধনাসাপেক্ষ স্বাধীনতা, সত্যনিষ্ঠা ও ন্যায়পরায়ণতার গুণেই রক্ষিত হয়। মিথ্যাচারী ও অন্যায়করীদের দ্বারা সৃষ্ট দুর্ভোগ মুষ্টিমেয় সত্যনিষ্ঠ ব্যক্তিকেই ভোগ করতে হয়। আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে এ কষ্টটুকু স্বীকার করে নেয়া ছাড়া উপায় নেই।

বাল্যকাল হইতেই আমাদের শিক্ষার সহিত আনন্দ নাই। কেবল যাহা কিছু নিতান্ত আবশ্যক, তাহাই কণ্ঠস্থ করিতেছি। তেমন করিয়া কোনো মতে কাজ চলে মাত্র; কিন্তু মনের বিকাশ লাভ হয় না। হাওয়া খাইলে পেট ভরে না, আহার করিলে পেট ভরে; কিন্তু আহারটি রিতিমত হজম করিতে অনেকগুলো অপাঠ্য পুস্থকের সাহায্য আবশ্যক। ইহাতে আনন্দের সহিত পড়িতে পড়িতে পরিবার শক্তি অলক্ষিতভাবে বৃদ্ধি পাইতে থাকে। গ্রহণ শক্তি, ধারণা শক্তি, চিন্তা শক্তি বেশ সহজে এবং স্বাভাবিক নিয়মে ফল লাভ করে।

সারাংশ: আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ। শিক্ষার সাথে আনন্দ না থাকলে সে শিক্ষা হৃদয়ে স্থান লাভ করে না। এ ধরনের শিক্ষা দিয়ে কোনো রকম কাজ চললেও মানবিক বিকাশ সাধিত হয় না। তাই শিক্ষাকে আনন্দের অনুসঙ্গ করতে হবে।

মানুষের সুন্দর মুখ দেখে আনন্দিত হয়ো না। স্বভাবে যে সুন্দর নয়, দেখতে সুন্দর হলেও তার স্বভাব, তার স্পর্শ, তার রীতিনীতিকে মানুষ ঘৃণা করে। দুঃস্বভাবের মানুষ মানুষের হৃদয়ে জ্বালা ও বেদনা দেয়। তার সুন্দর মুখে মানুষ তৃপ্তি পায় না। অবোধ লোকেরা মানুষের রূপ দেখে মুগ্ধ হয় এবং তার ফল ভোগ করে। যার স্বভাব মন্দ, সে নিজেও দুষ্ক্রিয়াশীল, মিথ্যাবাদী দুর্মতিকে ঘৃণা করে। মানুষ নিজে স্বভাব সুন্দর না হলেও সে স্বাভাবের সৌন্দর্যকে ভালোবাসে। স্বভাব গঠনে কঠিন পরিশ্রম ও সাধনা চাই, নইলে শয়তানকে পরাজিত করা সম্ভব নয়।

সারাংশ: শুধু সুন্দর মুখ দেখে মানুষকে নির্বাচন করা ঠিক নয়। বরং মানুষকে নির্বাচন করতে হয় সুন্দর স্বভাব দেখে। স্বভাবের সৌন্দর্যকে সবাই ভালোবাসে। স্বভাব গঠন সাধনার ব্যাপার। আর এ সাধনা উপসনারই নামান্তর।

অভ্যাস ভয়ানক জিনিস।একে হঠাৎ স্বভাব থেকে তুলে ফেলা কঠিন।মানুষ হবার সাধনাতেও তোমাকে সহিষ্ণু হতে হবে।সত্যবাদী হতে চাও?তাহলে ঠিক করো, সপ্তাহে অণ্তত একদিন মিথ্যা বলবে না।ছ মাস ধরে এমনি করে নিজে সত্য বলতে অভ্যাস করো। তারপর একসুভ দিনে আর একবার প্রতিজ্ঞা করো, সপ্তাহে তুমি দু দিন মিথ্যা বলবে না। একবছর পরে দেখবে সত্য কথা বলা তোমার কাছে অনেকটা সহজ হয়ে পড়েছে। সাধনা করতে করতে এমন এক দিন আসবে যখন ইচ্ছে করলে ও মিথ্যা বলতে পারবে না । নিজেকে মানুষ করার চেষ্টায় পাপ ও প্রবৃত্তির সঙ্গে সংগ্রামে তুমি হঠাত জয়ী হতে কখনো ইচ্ছা করো না, তাহলে সব পণ্ড হবে।

সারাংশ: মানুষ অভ্যাসের কাছে দারুনভাবে বশীভূত। স্বভাব থেকে অভ্যাসের মূলোত্পাটন করা অত্যান্ত কঠিন কাজ।মিথ্যা বলা একটা ভয়ানক বদভ্যাস। যে ব্যাক্তি এ বদভ্যাসে অভ্যাস্ত তাকে কঠোর সাধনা ও ধৈর্যের সঙ্গে মিথ্যা বলার অভ্যাস ত্যাগ করে সত্যবাদী হয়ে উঠতে হয়।হঠাত্ করেই কারও মিথ্যেবাদী থেকে সত্যবাদীতে পরিনত হওয়া সম্ভব নয়।

মাতৃস্নেহের তুলনা নাই। কিন্তু অতি স্নেহ অনেক সময় অমঙ্গল আনায়ন করে। যে স্নেহের উত্তাপে সন্তানের পরিপুষ্টি, তাহারই আধিক্যে সে অসহায় হইয়া পড়ে। মাতৃস্নেহের মমতার প্রাবাল্যে মানুষ আপনাকে হারাইয়া আসল শক্তি মর্যাদা বুঝিতে পারে না। নিয়ত মাতৃস্নেহের অন্তরালে অবস্থান করিয়া আত্মশক্তির সন্ধান সে পায় না-দুর্বল অসহায় পক্ষী-শাবকের মতো চিরদিন স্নেহাতিশয্যে আপনাকে সে একান্ত নির্ভরশীল মনে করে। ক্রমে জননীর পরম সম্পদ সন্তান অলস, ভীরু, দুর্বল ও পরনির্ভরশীল হইয়া মনুষ্যত্ব বিকাশের পথ হইতে দূরে সরিয়া যায়। অন্ধ মাতৃস্নেহ সে কথা বুঝে না—অলসক সে প্রাণপাত করিয়া সেবা করে—ভীরুতার দুর্দশা কল্পনা করিয়া বিপদের আক্রমণ হইতে ভীরুকে রক্ষা করিতে ব্যপ্ত হয়।

সারাংশ: মাতৃস্নেহ অতুলনীয়। তবে অতিরিক্ত মাতৃস্নেহ কল্যাণের বদলে অকল্যাণই বেশি করে। মায়ের অতিরিক্ত স্নেহাতিশয্যে সন্তানের স্বাভাবিক মনুষ্যত্বের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। অন্ধ মাতৃস্নেহ অবোধ সন্তানের দুর্বলতাকে প্রশ্রয় দেয়। এতে সন্তান ক্ষতির সম্মুখীন হয় এবং পরনির্ভশীল হয়ে পড়ে।

 ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবাই জ্ঞানীর কাজ। পিঁপড়া, মৌমাছি পর্যন্ত যখন ভবিষ্যতে জন্য ব্যতিব্যস্ত, তখন মানুষের কথা বলাই বাহুল্য। প্রতিটি মানুষেক প্রত্যেকটি কাজই ভবিষ্যৎ ভেবে করা উচিত। পণ্ডিতেরা বলে গেছেন’ গত বিষয়ের জন্য অনুশোচনা কর না।এটা সেটা বর্তমান কথা বলতে বলতেই অতীত হয়ে গেল। কাজেই নদীর তরঙ্গ গণা আর বর্তমানের চিন্তা করা সামানই অনর্থক। ভবিষ্যৎটা হলো আসল জিনিস। সেটা কখনো শেষ হয় না। তাই মানুষের প্রতিটি কাজ ভবিষ্যৎ ভেবেই করা উচিত।

সারাংশ: মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে ভবিষ্যতের ভাবনা ভেবে অগ্রহসর হওয়া। অতীতের ব্যর্থতার অনুশোচনা করে সময় নষ্ট করা উচিত নয়। ভবিষ্যৎই সম্ভাবনাময়, তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবেই বর্তমানের কাজ করা উচিত।

Friday, July 3, 2020


# শ্রমকে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ কর। কালিধুলার মাঝে, রৌদ্রবৃষ্টিতে কাজের ডাকে নেমে যাও। বাবু হয়ে ছায়ায় পাখার তলে থাকবার কোনো দরকার নেই। এ হচ্ছে মৃত্যুর আয়োজন। কাজের ভিতর কুবুদ্ধি, কুমতলব মানবচিত্তে বাসা বাঁধতে পারে না। কাজে শরীরে সামর্থ্য জন্মে, স্বাস্থ্য, শক্তি, আনন্দ, স্ফূর্তি সকলই ভাল হয়। পরিশ্রমের পর যে অবকাশ লাভ হয় তা পরম আনন্দের অবকাশ। তখন কৃত্রিম আয়োজন করে আনন্দ করবার কোনো প্রয়োজন হয় না। শুধু চিন্তার দ্বারা জগতের হিত সাধন হয় না। শুধু চিন্তা করে মানুষ পূর্ন জ্ঞান লাভ করতে সমর্থ হয় না। মানবসমাজে মানুষের সঙ্গে কজে, রাস্তায়, কারখানায়, মানুষের সঙ্গে ব্যবহারে মানুষ নিজেকে পূর্ণ করে। চিন্তা ও পুস্তক মানব মনের পাঁপড়ি খুলে দেয় মাত্র, বাকি কাজ সাধিত হয় সংসারের কর্মক্ষেত্রে।

সারাংশ: আলস্য মানবজীবনের মৃত্যু ডেকে আনে আর কাজ জীবনকে সুন্দর করে তোলে। শুধু চিন্তা দিয়ে জগতের হিত সাধন হয় না বরং চিন্তার সঙ্গে যখন কর্ম যোগ হয় তখনই মানব কল্যাণ সাধিত হয়, সুন্দর হয় বিশ্বজগৎ।

# প্রকৃত জ্ঞানের স্পৃহা না থাকলে শিক্ষা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। তখন পরীক্ষা পাস করাটাই বড় হয় এবং পাঠ্যপুস্তকের পৃষ্ঠায় জ্ঞান সীমাবদ্ধ থাকে। এই কারণে পরীক্ষা পাস করা লোকের অভাব নেই আমাদের দেশে, কিন্তু অভাব আছে জ্ঞানের। যেখানেই পরীক্ষা পাসের মোহ তরুণ ছাত্র-ছাত্রীদের উৎকণ্ঠিত রাখে সেখানেই জ্ঞান নির্বাসিত জীবন যাপন করে। একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে জগতের বুকে অক্ষয় অমর লাভ করতে হলে জ্ঞানের প্রতি তরুণ সমাজের উন্মুখ করতে হবে। সহজ লাভ আপাতত সুখের হইলেও পরিণামে কল্যাণ বহন করে না। পরীক্ষা পাসের মোহ থেকে মুক্ত না হলে তরুণ সমাজের সামনে কখনোই জ্ঞানের দিগন্ত উন্মোচিত হবে না।

সারাংশ: শিক্ষায় জ্ঞানের আগ্রহ না থাকলে সেই শিক্ষা ব্যর্থ হয়। কেবল পরীক্ষা পাস নয়, জ্ঞানার্জনই শিক্ষার লক্ষ্য। জ্ঞানচর্চার মধ্যে স্বাধীন জাতির মর্যাদা নিহত। কাজেই পরীক্ষা পাসের সহজ লাভ থেকে দৃষ্টি পরিবর্তন করে জ্ঞানচর্চায় মনোযোগী হওয়া আবশ্যক।


# সূর্যের আলোতে রাতের অন্ধকার কেটে যায়।শিক্ষার আলো আমাদের অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর করে। আমাদের দৃষ্টিতে চারপাশের জগৎ আরও সুন্দর হয়ে ওঠে। আমরা জীবনের  নতুন অর্থ খুঁজে পাই; শিক্ষার আলো পেয়ে আমাদের ভেতরের মানুষটি জেগে ওঠে। আমরা বড় হতে চাই, বড় হওয়ার জন্য চেষ্টা করি। আমরা সুন্দর করে বাঁচতে চাই, বাাঁচার মতো বাঁচতে চাই। আর সুন্দর করে বাঁচতে হলে চাই জ্ঞান। সেই জ্ঞান কাজেও লাগানো চাই। শিক্ষার ফলে আমাদেও ভেতর যে শক্তি লুকানো থাকে তা ধীরে ধীওে জেগে ওঠে।  আমরা মানুষ হয়ে উঠি।
সারাংশ: সূর্যের আলো যেমন অন্ধকার দূর করে, তেমনি শিক্ষার আলো মনের অন্ধকার দূর করে দেয়। প্রত্যেকের ভিতরে লুকানো শক্তি আছে; আর শিক্ষা এ শক্তিকে বিকশিত করে। শিক্ষার মাধ্যমে আমরা জ্ঞান ও দক্ষতা লাভ করে নিজের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে যথার্থ মানুষ হয়ে উঠি।

সময় ও স্রোত কাহারও জন্যে অপেক্ষা করে না, চিরকাল চলিতে থাকে। সময়ের নিকট অনুনয় কর, ইহাকে ভয় দেখাও ভ্রুক্ষেপও করিবে না; সময় চলিয়া যাইবে, আর ফিরিবে না। নষ্ট স্বাস্থ্য ও হারানো ধন পুনঃপ্রাপ্ত হওয়া য়ায়, কিন্তু সময় একবার গত হইয়া গেলে আর ফিরিয়া আসে না। গত সময়ের জন্য অনুশোচনা করা নিষ্ফল। যতই কাঁদ না, গত সময় আর কখনো ফিরিয়া আসিবে না।

সারাংশ: নদীর স্রোত নিয়ত প্রবহমান।সময় ও বহমান।দুটিই কারও জন্য অপেক্ষা করে না। তাই যে-সময় চলে গেল অমনোযোগ ও অবহেলায় তার জন্য অনুশোচনা করা নিরর্থক। তাই সময়র কাজ সময়ে করাটাই সর্বোত্তম।


# বাঙালি যেদিনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বলতে পারবে- ‘বাঙালির বাংলা’ সেদিন তারা অসাধ্য সাধন করবে। বাঙালির মতো জ্ঞান-শক্তি ও প্রেম-শক্তি এশিয়ায় কেন, বুঝি পৃথিবীতে কোনো জাতির নেই। কিš‘ কর্ম-শক্তি একেবারে নেই বলেই তাদের এই দিব্যশক্তি তমসা”ছন্ন হয়ে আছে। তাদের কর্ম-বিমুখতা, জড়তা, মৃত্যুভয়, আলস্য, তন্দ্রা, নিদ্রা, ব্যবসা-বাণিজ্যে অনি”ছার কারণ। তারা তামসিকতায় আ”ছন্ন হয়ে চেতনা-শক্তিকে হারিয়ে ফেলেছে। এই তমঃ এই তিমির, এই জড়তাই অবিদ্যা। অবিদ্যা কেবল অন্ধকার পথে ভ্রান্তির পথে নিয়ে যায়; দিব্যশক্তিকে নিস্তেজ, মৃতপ্রায় করে রাখে।

সারাংশ: বাঙালি তাদের সঠিক পরিচয় বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য কর্মে আত্মনিয়োগ করতে হবে। অলসতা আর কাজের প্রতি অনীহার জন্য তারা জগতের সবকিছু থেকে পিছিয়ে আছে। এই আলস্য ও কর্ম বিমুখতাকে উপেক্ষা করে বাঙালিকে জেগে উঠতে হবে। তবেই বাংলা প্রকৃত অর্থে বাঙালির হবে।

একজন মানুষ ভালো কি মন্দ, আমরা তা বুঝতে পারি তার ব্যবহার দিয়ে। সে ভদ্র কি অভদ্র তাও বুঝতে পারি তার ব্যবহার দিয়ে। ব্যবহার ভালো হলে লোকে তাকে ভালো বলে। তাকে পছন্দ করে। ব্যবহার খারাপ হলে লোকে তাকে খারাপ বলে। তাকে অপছন্দ করে। তার সঙ্গে মিশতে চায় না। তার সঙ্গে কাজ করতে চায় না। তাকে কাছে ডাকতে চায় না।   তোমার ব্যবহারই তোমার মনুষ্যত্বের পরিচয়।

সারাংশ: সুন্দও ব্যবহারের মধ্যেই মনুষ্যেত্বের পরিচয় নিহিত। মানুষের কথা-বার্তা, চিন্তা, মনোভাব ও আদব-কায়দারর মধ্য দিয়েই সুন্দর ব্যবহারের প্রকাশ ঘটে। ভালো ব্যবহার দিয়ে সহজে অপরের ভালোবাসা পাওয়া যায়। তাই সবাইকে ভালো ব্যবহারের অধিকারী হতে হবে।


সারাংশ

# কোথা থেকে এসেছে আমাদের বাংলা ভাষা? ভাষা কি জন্ম নেয় মানুষের মত? বা যেমন বীজ থেকে গাছ জন্মে তেমনভাবে জন্ম নেয় ভাষা? ইা, ভাষা মানুষ বা তরুর মতো জন্ম নেয় না। বাংলা ভাষাও মানুষ বা তরুর মতো জন্ম নেয়নি, কোনো কল্পিত স্বর্গ থেকেও আসেনি। এখন আমরা যে বাংলা ভাষা বলি এক হাজার বছর আগে তা ঠিক এমন ছিল না। সে-ভাষায় এ-দেশের মানুষ কথা বলত, গান গাইত, কবিতা বানাত। মানুষের মুখে মুখে বদলে যায় ভাষার ধ্বনি। রূপ বদলে যায় শব্দের, বদল ঘটে অর্থের। অনেক দিন কেটে গেলে মনে হয় ভাষাটি একটি নতুন ভাষা হয়ে উঠেছে। আর সে ভাষা বদল ঘটেই জন্ম হয়েছে বাংলা ভাষার।

সারাংশ: ভাষার ধর্মই হচ্ছে বদলে যাওয়া। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের মুখে মুখে ব্যবহারের মাধ্যমে বদলে যায় ভাষা; বদলে যায় ধ্বনির ও অর্থের। হাজার বছরের পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় এমনি ভাবেই আমাদের বাংলা বাষার জন্ম হয়েছে।

# আনন্দ প্রকাশ জীবনীশক্তির প্রবলতারই প্রকাশ। আনন্দকে আমরা বুঝি রূপ-রস-শব্দ-গন্ধ ইত্যাদির সাহায্যে, ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে। মানুষ যখন আনন্দ পায় তখন সে তার মনকে প্রকাশ করতে চায়-নানা রূপে। তাই সৃষ্টি হলো চিত্রশিল্পী, নৃত্যশিল্পী, সংগীতশিল্পী, কবি, সাহিত্যিক। পুরাকালের গুহা মানুষ থেকে শুরু করে বর্তমান যুগ পর্যন্ত মানুষ নিজের পাওয়া আনন্দকে সুন্দরকে অন্য মানুষের মধ্যে বিস্তার করতে চেয়েছে। তাই সৃষ্টি হয়েছে নানান আঙ্গিকের শিল্পকলা।

সারাংশ: মানুষের জীবনীশক্তির প্রকাশ ঘটে আনন্দে। মানুষ সমস্ত ইদ্রিয়কে দিয়ে আনন্দ উপলব্ধি করে। আর সে আনন্দ সাবর কাছে জানাতে চায়। তাই ছবি, গান, কবিতা, নাচ, ভাস্কর্য ইত্যাদি শিল্পকলার মাধ্যমে মানুষ তার আনন্দকে প্রকাশ করে। এই আনন্দ ও সুন্দর বোধ মানুষের মনকে তৃপ্ত করে।