চলমান কথা

গত ১১ মে, ২০২০ আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের অনলাইন পরীক্ষার শুভ উদ্বোধন করেন প্রকৌশলী এ এম এম সাজ্জাদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এপিএসসিএল।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু; স্বপ্ন হলো সত্যি। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সাথে স্বপ্ন যাবে বাড়ি।

Friday, September 4, 2020

 জাতীয় স্মৃতিসৌধ

ঢাকার অদূরে সাভারের নবী নগরে আমাদের জাতীয় স্মৃতিসৌধ অবস্থিত। জাতীয় স্মৃতিসৌধ আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের শহীদদের প্রতি জাতির শ্রদ্ধার প্রতীক। এটি ইট, বালি, পাথর ও রডের সংমিশ্রনে তৈরি হলেও এটি প্রতীক অর্থে রক্তের তৈরি। জাতীয় স্মৃতিসৌধের উচ্চতা প্রায় ১৫০ ফুট। কিন্তু প্রতিটি শহীদের অবস্থান তার চেয়েও উঁচুতে। এটি লক্ষ লক্ষ শহীদ যারা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে তাদের প্রতীক হিসেবে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে বাংলার জমিনের বুকে । জাতীয় স্মৃতিসৌধটি ১৩০ ফুট প্রশস্থ ভিতের উপর ১৫০ ফুট উচ্চতার টাওয়ার। প্রকৃতপক্ষে এটি হচ্ছে সাতটি টাওয়ারের সারি যা ধাপে ধাপে ১৫০ ফুট পর্যন্ত উঁচু। ১৯৭২ সালে বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকীতে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্হাপন করা হয়েছিল। এখানে একটি বিশাল কমপ্লেক্সের পরিকল্পনা আছে। পুরো কমপ্লেক্সটি ১২৬ একর জমি জুড়ে বিস্তৃত। এখানে একটি মসজিদ , একটি গ্রন্থাগার ও একটি জাদুঘর থাকবে। এ জাদুঘরে স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষিত থাকবে। জাতীয় স্মৃতিসৌধ দেশবাসীকে শহীদদের অসীম সাহস এবং আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। স্মৃতিসৌধের সবচেয়ে হুদয়বিদারক দৃশ্য হচ্ছে টাওয়ারের কাছে স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের কয়েকটি সমাধি। আমরা যখন জাতীয় স্মৃতিসৌধের সম্মুখে দাড়াই তখন শহীদদের স্মৃতি স্মরণ হয়, তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা বাংলার বুকে স্বাধীন ভাবে ঘুরতে পারছি এ কথার স্মরণ হয়।

 টেলিভিশন

টেলিভিশন আধুনিক বিজ্ঞানের একটি অন্যতম বিস্ময়কর আবিষ্কার । এটি বর্তমান দুনিয়ার সবচেয়ে সাধারণ চিত্তবিনােদনের উৎস হয়ে উঠেছে । এটি এখন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। টেলিভিশন দ্বারা এমন একটি বৈজ্ঞানিক কৌশলকে বুঝায় যার দ্বারা দূরে ছবি প্রেরণ করা যায়। এটি পৃথিবীর দূরবর্তী স্থানে আলােকচিত্রের ছবি এবং কণ্ঠস্বর বহণ করতে পারে। টেলিভিশন মানুষের শ্রবণ ও দৃষ্টি উভয় প্রকার চাহিদা মেটায়। আমরা টেলিভিশনে বিখ্যাত ব্যক্তিদের কথা শুনতে পাই এবং তাদেরকে সরাসরি দেখতেও পাই। বর্তমানকালে টেলিভিশন পণ্যসামগ্রী প্রচারেরও সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম যেহেতু টেলিভিশন লোকসমাজে জনপ্রিয় । দিনের কাজ শেষে আমরা টেলিভিশনের পর্দার কাছে বসি এবং খবর, খেলাধূলা, শিক্ষামূলক প্রচারণা ইত্যাদি উপভােগ করি। টেলিভিশন সকল গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক খেলাধুলা সম্প্রচার করে এবং আমরা সেগুলাে সরাসরিও টেলিভিশনের পর্দায় দেখতে পাই। টেলিভিশনের অনুষ্ঠানমালা কেবল চিত্তবিনােদনমূলকই নয়, শিক্ষনীয়ও। বর্তমানে টেলিভিশন সবচেয়ে শক্তিশালী গণমাধ্যম। টেলিভিশন বিভিন্ন শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানও সম্প্রচার করে যা ছাত্রদের খুবই কাজে লাগে। কিন্তু টেলিভিশন অবিমিশ্রিত আশীর্বাদ নয়। ছেলেমেয়েরা অনেক সময় লেখাপড়া বাদ দিয়ে টেলিভিশনে অনুষ্ঠান দেখার প্রতি আসক্ত হয়। তাছাড়া স্যাটেলাইট চ্যানেলে সম্প্রচারিত বিদেশি অনুষ্ঠানমালার প্রভাবে ছেলেমেয়েরা বিদেশ সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হয়। বস্তুত, টেলিভিশনের কিছু নেতিবাচক দিক থাকা সত্ত্বেও এটি বর্তমানে একটি জনপ্রিয় চিত্তবিনােদনের মাধ্যম।

 আর্সেনিক দূষণ 

আর্সেনিক একটি বিষাক্ত উপাদান যা পানিতে পাওয়া যায় । মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক পানির দূষণ ঘটায়। পানিতে নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি পরিমাণ আর্সেনিক দ্রবীভূত থাকলে বা যখন পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি বেশি পরিমাণে থাকে তখন তাকে আর্সেনিক দূষণ বলা হয়। আর্সেনিক সাধারণত ভূগর্ভস্থ পানিতে পাওয়া যায়। কেউ আর্সেনিক যুক্ত নলকূপের পানি পান করলে সে আর্সেনিক দূষনের শিকার হয়ে আর্সেনিকোসিসে আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষ আর্সেনিক দূষণের স্বীকার হয়েছে ও হচ্ছে । আর্সেনিক কোন সংক্রামক বা ছােয়াচে রােগ নয়। যে সমস্ত মানুষ বিশুদ্ধ পানি পান করে তারা আর্সেনিকে আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শে এলেও আর্সেনিকে আক্রান্ত হবে না। আর্সেনিক একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। আর্সেনিকে আক্রান্ত মানুষ শরীরে তীব্র জ্বালা অনুভব করে। চোখ লাল হয় এবং চোখ থেকে পানি পড়ে। এটা আক্রান্ত ব্যাক্তির যকৃত, কিডনি ও পাকস্থলীতে সমস্যার সৃষ্টি করে। মানুষ আর্সেনিক মুক্ত নলকূপের পানি পান করে আর্সেনিকের দূষণ থেকে মুক্তি ও নিরাপদ থাকতে পারে। ভিটামিন এ, সি এবং ই আর্সেনিকোসিসের জন্য কার্যকরী । আর্সেনিক যুক্ত নলকূপকে লাল রং দ্বারা চিহ্নিত করতে হবে এবং এসব নলকূপের পানি পান থেকে বিরত থাকতে হবে। আমাদের সুস্থ্য থাকার জন্য অবশ্যই আর্সেনিক মুক্ত নলকূপের পানি পান করতে হবে।

 বাল্যবিবাহ

প্রাপ্তবয়স্ক বা পরিণত বয়স হওয়ার আগেই মেয়েদেরকে বিবাহ দেওয়ার প্রথাকে বাল্য বিবাহ বলে। মূলত কোন মেয়ে যদি শারীরিক এবং মানসিক পরিপক্কতা অর্জনের পূর্বে তাকে বিবাহ দেওয়া হয় তবে তা বাল্য বিবাহ হিসেবে গণ্য করা হয়। বাংলাদেশের মেয়েদের ১৮ বছরের নিচে এবং এবং ছেলেদের ২১ বছরের নিচে বিবাহ দেওয়া নিষিদ্ধ করে আইন করা হয়েছে। কিন্তু অনেক পিতা-মাতাই বিবাহ সম্বন্ধে এই আইনটি মেনে চলেন না।সাধারণত গ্রাম অঞ্চলেই বাল্য বিবাহের প্রচলন বেশি দেখা যায়। নিরক্ষর এবং গরীব মেয়েরা বাল্য বিবাহের শিকার হয়ে থাকে । দারিদ্র, নিরক্ষরতা, কুসংস্কার এবং লিঙ্গবৈষম্য বাল্য বিবাহের প্রধান কারণ। বাংলাদেশের মেয়েরা একটি বৈরী বা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশে জন্মগ্রহণ করে। গরীব পিতা-মাতা মনে করেন যে কন্যা সন্তান তাদের দুঃখ বাড়াতে পৃথিবীতে এসেছে,কন্যা সন্তানকে তারা বোঝা মনে করেন । সেসব পিতা-মাতার প্রধান উদ্বেগের বিষয় হয় মেয়েদেরকে দ্রুত বিবাহ দেয়া। বাল্য বিবাহ সমাজে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে । অপরিণত বয়সে স্বামীর ঘরে গিয়ে কোমলমতি মেয়ে এক বৈরী পরিবেশের সম্মুখীন হয়। সে নতুন পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে না। তাকে প্রায়ই লাঞ্চনা, তিরস্কার ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। সে শারীরিক পরিপক্কতা অর্জনের পূর্বেই মা হয়। ফলে সে ও তার সন্তান অপুষ্টিসহ নানা রােগে ভােগে। অসময়ে সন্তান জন্মদানে অনেক মেয়ের মৃত্যুও ঘটে। তাই বাল্য বিবাহ রােধকল্পে আমাদের জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে আইন কঠোরতাবে প্রয়ােগ করতে হবে। মেয়েদেরকে শিক্ষা দেয়ার মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে। আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ ও বাল্যবিবাহ সম্পর্কে সভা সমাবেশ করে সচেতনতা বাড়ানো যেতে পারে।

বৃক্ষরোপণ

আমাদের বাড়ির চারপাশে, রাস্তাঘাটে, পার্কে, বাগানে, রেল লাইনের ধারে এবং পতিত জমিতে তথা যেকোনো ফাকা স্থানে চারা গাছ লাগানােই হলো বৃক্ষরােপণ। গাছপালা আমাদের পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। গাছপালা নানাভাবে আমাদেরকে সাহায্য করে। গাছপালা আমাদেরকে ফুল ও ফল দেয়। তীব্র রােদের সময় ছায়া দেয়। গাছপালা বৃষ্টি হতে সহায়তা করে এবং ভূমির ক্ষয় রােধ করে। গাছ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। পরিবেশ সংরক্ষণে বৃক্ষ রােপণ খুবই জরুরি। বিশ্বের তাপমাত্রা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৃথিবীর চারপাশে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ছে। আমাদের দেশের পরিবেশ বিশেষ করে শহর অঞ্চলের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। আমাদের বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। জ্বালানি ও বাসস্থানের প্রয়ােজনে মানুষ নির্বিচারে গাছ কাটছে ও বন জঙ্গল নিধন করছে। এভাবে গাছকাটার ফলে বনাঞ্চলের গাছপালা উজার হয়ে যাচ্ছে। গাছপালা বায়ু দূষণ রােধ করতে সহায়তা করে। বনাঞ্চল পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে। একটি দেশের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য কমপক্ষে তার মোট ভূখণ্ডের ২৫% বনভূমি থাকা প্রয়ােজন। কিন্তু আমাদের দেশের ভূখণ্ডের মাত্র ৯% বনভূমি আছে। বর্তমান হারে বনের গাছপালা কাটা বন্ধ না হলে অচিরেই আমাদের বনাঞ্চল গাছপালা শূন্য হয়ে পড়বে। আমাদের দেশে ও বনে গাছপালা না থাকলে দেশ একদিন মরুভূমিতে পরিণত হবে। তাই দেশের পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে আমাদেরকে বেশি করে গাছ লাগাতে হবে , বৃক্ষরােপণ কর্মসূচি পালন করতে হবে।

 বৃক্ষরোপণ

আমাদের বাড়ির চারপাশে, রাস্তাঘাটে, পার্কে, বাগানে, রেল লাইনের ধারে এবং পতিত জমিতে তথা যেকোনো ফাকা স্থানে চারা গাছ লাগানােই হলো বৃক্ষরােপণ। গাছপালা আমাদের পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। গাছপালা নানাভাবে আমাদেরকে সাহায্য করে। গাছপালা আমাদেরকে ফুল ও ফল দেয়। তীব্র রােদের সময় ছায়া দেয়। গাছপালা বৃষ্টি হতে সহায়তা করে এবং ভূমির ক্ষয় রােধ করে। গাছ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। পরিবেশ সংরক্ষণে বৃক্ষ রােপণ খুবই জরুরি। বিশ্বের তাপমাত্রা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৃথিবীর চারপাশে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ছে। আমাদের দেশের পরিবেশ বিশেষ করে শহর অঞ্চলের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। আমাদের বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। জ্বালানি ও বাসস্থানের প্রয়ােজনে মানুষ নির্বিচারে গাছ কাটছে ও বন জঙ্গল নিধন করছে। এভাবে গাছকাটার ফলে বনাঞ্চলের গাছপালা উজার হয়ে যাচ্ছে। গাছপালা বায়ু দূষণ রােধ করতে সহায়তা করে। বনাঞ্চল পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে। একটি দেশের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য কমপক্ষে তার মোট ভূখণ্ডের ২৫% বনভূমি থাকা প্রয়ােজন। কিন্তু আমাদের দেশের ভূখণ্ডের মাত্র ৯% বনভূমি আছে। বর্তমান হারে বনের গাছপালা কাটা বন্ধ না হলে অচিরেই আমাদের বনাঞ্চল গাছপালা শূন্য হয়ে পড়বে। আমাদের দেশে ও বনে গাছপালা না থাকলে দেশ একদিন মরুভূমিতে পরিণত হবে। তাই দেশের পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে আমাদেরকে বেশি করে গাছ লাগাতে হবে , বৃক্ষরােপণ কর্মসূচি পালন করতে হবে।

 একুশে ফেব্রুয়ারি 

বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস 

বা শহিদ দিবস

বাংলাদেশের ইতিহাসে একুশে ফেব্রুয়ারি একটি স্মরণীয় দিন। ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে সারা দেশে একুশে ফেব্রুয়ারি দিবস পালিত হয়। আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি রফিক, সালাম, জব্বার ও বরকতসহ আরাে অনেকে ঢাকার রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। তাই ১৯৫২ সাল থেকে প্রতি বৎসর বাংলাদেশের মানুষ শ্রদ্ধাভরে একুশে ফেব্রুয়ারির শহীদদের আত্যত্যাগকে স্মরণ করে আসছে। বাংলাদেশে একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবসটি অমর একুশে হিসেবে বেশি পরিচিত। একুশে ফেব্রুয়ারি এখন সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়। ১৯১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্যারিসে জাতিসংঘের ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদের ৩০তম অধিবেশন একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। কেউ বা আবার বুকে বা কঁাধে কালো ব্যাজ পরিধান করে। সর্বস্তরের মানুষ একুশে ফেব্রুয়ারির ভোরে নগ্ন পায়ে শহীদ মিনারের যায়। তারা বুকে বা কঁাধে কালো ব্যাজ ধারণ করেন এবং আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানাে একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কী ভুলিতে পারি ? এ গানটি গেয়ে গেয়ে শহীদ মিনারে যায় এবং শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পন করে ও শহীদ মিনারের পাদদেশে নীরবে দাড়িয়ে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে। দিবসটি পালন উপলক্ষে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন আলোচনা সভার আয়ােজন করে। একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের আত্মচেতনার দিন।


 স্কুল ম্যাগাজিন 

স্কুল ম্যাগাজিন বলতে এমন একটি ম্যাগাজিনকে বুঝায় যা একটি স্কুলে প্রতি বৎসর প্রকাশিত হয় । স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক সম্মিলিতভাবে একটি স্কুল ম্যাগাজিন প্রকাশ করে। স্কুল ম্যাগাজিনে কবিতা, প্রবন্ধ, ছােট গল্প, কৌতুক প্রভৃতি থাকে। ছাত্র এবং শিক্ষকদের লেখা নিয়েই স্কুল ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়। স্কুল ম্যাগাজিন প্রকাশ করা কোনো সহজ কাজ নয়। সাধারণত স্কুল ম্যাগাজিন প্রকাশের জন্য প্রধান শিক্ষক একটি সভা ডাক দেন এবং ম্যাগাজিন কমিটি গঠন করেন। প্রধান শিক্ষক স্কুল ম্যাগাজিন কমিটির সভাপতি হিসেবে কাজ করেন। তারপর ছাত্র বা শিক্ষকদের মধ্য থেকে একজন সম্পাদক নির্বাচন করে দেন তিনি। ম্যাগাজিন কমিটির সম্পাদক ছাত্র ও শিক্ষকদের নিকট লেখা আহবান করেন। তারপর ভালাে লেখাগুলাে মুদ্রণের জন্য বাছাই করা হয়। ছাত্রদের কাছ থেকে চাদার মাধ্যমে ও স্কুল ফান্ড থেকে এর খরচ মেটানাে হয়। ছাত্ররা সাধারণত প্রতি বছর স্কুল ম্যাগাজিনের জন্য ফি প্রদান করে। অনেক সময় স্থানীয় বিত্তশালী ও ব্যবসায়ীগণও স্কুল ম্যাগাজিন প্রকাশের জন্য পৃষ্ঠপােষকতা করেন। লেখা বাছাই করার পর সেগুলাে মুদ্রণের জন্য ছাপাখানায় প্রেরণ করা হয়। অতপর ছাত্র এবং শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে একটি স্কুল ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়। স্কুল ম্যাগাজিনটি ছাত্রদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। স্কুল ম্যাগাজিন ছাত্রদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি ছাত্রদের লেখনির এ সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করে। এটি ছাত্রদের জ্ঞান বৃদ্ধি করে এবং চিন্তাশক্তির উন্নয়ন ঘটায়। এটি ছাত্রদেরকে ভবিষ্যতে বড় লেখক হতে অনুপ্রেরণা দেয়।



 পরিবেশ দূষণ 

পরিবেশ দূষণ সমস্যা বর্তমান বিশ্বে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। পৃথিবীর সকল দেশ বিশেষ করে উপকূলীয় গরিব শেসমূহ পরিবেশ দূষণ নিয়ে সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত । বাংলাদেশও এ তালিকার বাহিরে নয়,বাংলাদেশও পরিবেশ দূষণের মারাত্মক শিকার। পরিবেশ দূষণের ফলে আমাদের দেশ ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশে পরিবেশ দূষণের জন্য জন্য অতিরিক্ত জনসংখ্যা , অপরিকল্পিত নগরায়ন, দ্রূত শিল্পায়ন, বনভূমি উজাড়,অতিরিক্ত সার ও কীটনাশকের বাবহার ,যানবানের বিষাক্ত ধোয়া , শিল্প কারখানার অপরিশোধিত আবর্জনা নিষ্কাষণ দায়ী। আমাদের পরিবেশের একটি গুরুত্ব উপাদান হচ্ছে বা়য়ু ।মানুষের দ্বারা বা়য়ু প্রতিনিয়নত দূষিত হচ্ছে। বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ হলাে কলকারখানা থেকে নির্গত বিষ্কাক্ত ধোয়া। আমাদের পরিবেশের অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পানিও বিভিন্নভাবে দূষিত হচ্ছে। পানিতে বর্জ্য নিক্ষেপ করে এবং জমিতে ব্যবহৃত সার ও কীটনাশক বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে নদী,পুকুরে এস পড়ে যা পানিকে দূষিত করছে । কলকারখানাগুলাে নদী ও খালে রাসায়নিক দ্রব্য ও বর্জ্য পদার্থ নিক্ষেপ করে এবং যা পানি দূষিত ও বিষাক্ত করে তুরছে । মানুষের বিবেচনাহীন কাজই পরিবেশ দূষণের মূল কারণ। জ্বালানি ও বাসস্থানের প্রয়ােজনে মানুষ নির্বিচারে গাছ কাটছে ও বন-জঙ্গল পুড়াচ্ছে এবং পরিবেশের ভারসামা নষ্ট করছে। পরিবেশ দূষণের ফলে বিশ্বের তাপমাত্রা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাঠ, গাছপালা,বন, কয়লা ও তৈল পুড়ানাের জন্য প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস সৃষ্টি হচ্ছে এবং তা বায়ুমণ্ডলে জমা হচ্ছে। শহরের রাস্তায় যানজটে আটকা পড়া গাড়ি থেকেও বিষাক্ত ধোয়া ও গ্যাসীয় পদার্থ নির্গত হচ্ছে । এভাবে নিয়মিত মানুষের দ্বারা পরিবেশ দূষণ ঘটছে। পরিবেশ দূষণ প্রতিরােধ করতে না পারলে পৃথিবীতে অন্যান্য জীবজন্তুর ন্যায় মানুষের জীবনও বিপন্ন হবে। পরিবেশ দূষণ রােধকল্পে সারাদেশে ব্যাপকহারে বৃক্ষ রোপণ করতে হবে। বৃক্ষ রােপণকে একটি সামাজিক আন্দালনে পরিণত করতে হবে এবং সকলকে এ ব্যপারে সচেতন করে তুলতে হবে।

 

 শিশুশ্রম

আজকের শিশুরাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ। কিন্তু আমাদের দেশে অশিক্ষা ও দারিদ্র্যের কারণে অধিকাংশ শিশুই উপযুক্ত কোনো পরিচর্যা পায় না। বরং জীবনের শুরুতে তাদের বের হতে হয় জীবিকার খোঁজে। নিয়োজিত হতে হয় ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে। শিশুশ্রম তাই এ দেশে খুব সাধারণ ব্যাপার হয়ে গেছে। বিদ্যমান শ্রম আইনে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করা সত্ত্বেও ব্যাপক সংখ্যক শিশু ঘরে ও বাইরে অর্থাৎ কল-কারখানা, ওয়ার্কশপ, রেস্টুরেন্ট, মিষ্টির দোকান, মোটর গ্যারেজ, বাস ও টেম্পো, নির্মাণকাজ, চা বাগান, কৃষি ও গৃহকর্ম ইত্যাদিতে নিয়োজিত। এসব কাজে কোনো নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। শিশুরা এসব কাজে নিয়োজিত থেকে অনেক সময়ই কেবল জীবন ধারণের খোরাকি পেয়ে থাকে, যা দয়া-দাক্ষিণ্য বলেও বিবেচিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে শিশুদের কাজগুলোকে দাসতুল্য বলা যায়। শিশু শ্রমিকদের প্রায়ই তাদের শারীরিক ক্ষমতার চেয়ে কঠিন কাজ দেওয়া হয়। তাদের অনেকেই বিপজ্জনক ধোঁয়া বা গ্যাস অ্যাসবেস্টস, সিসা, সোডিয়াম ইত্যাদি সৃষ্ট অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করে। ফলে তাদের চর্মরোগ, হূদরোগ, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি সমস্যায় ভুগতে হয়। গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের, বিশেষ করে মেয়েদের নিপীড়নের আশঙ্কা থাকে। অনেক শিশু অগ্নিদগ্ধ হয়ে কারখানায় দুর্ঘটনা, বিষক্রিয়া, জখম ও সহিংসতায় মৃত্যুমুখে পতিত হয়। বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৪ অনুচ্ছেদে সব ধরনের জবরদস্তিমূলক শ্রমকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই শিশুশ্রমের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে গণসচেতনতা বাড়িয়ে শিশুর শিক্ষা লাভের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে।