শিশুশ্রম
আজকের শিশুরাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ। কিন্তু আমাদের দেশে অশিক্ষা ও দারিদ্র্যের কারণে অধিকাংশ শিশুই উপযুক্ত কোনো পরিচর্যা পায় না। বরং জীবনের শুরুতে তাদের বের হতে হয় জীবিকার খোঁজে। নিয়োজিত হতে হয় ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে। শিশুশ্রম তাই এ দেশে খুব সাধারণ ব্যাপার হয়ে গেছে। বিদ্যমান শ্রম আইনে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করা সত্ত্বেও ব্যাপক সংখ্যক শিশু ঘরে ও বাইরে অর্থাৎ কল-কারখানা, ওয়ার্কশপ, রেস্টুরেন্ট, মিষ্টির দোকান, মোটর গ্যারেজ, বাস ও টেম্পো, নির্মাণকাজ, চা বাগান, কৃষি ও গৃহকর্ম ইত্যাদিতে নিয়োজিত। এসব কাজে কোনো নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। শিশুরা এসব কাজে নিয়োজিত থেকে অনেক সময়ই কেবল জীবন ধারণের খোরাকি পেয়ে থাকে, যা দয়া-দাক্ষিণ্য বলেও বিবেচিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে শিশুদের কাজগুলোকে দাসতুল্য বলা যায়। শিশু শ্রমিকদের প্রায়ই তাদের শারীরিক ক্ষমতার চেয়ে কঠিন কাজ দেওয়া হয়। তাদের অনেকেই বিপজ্জনক ধোঁয়া বা গ্যাস অ্যাসবেস্টস, সিসা, সোডিয়াম ইত্যাদি সৃষ্ট অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করে। ফলে তাদের চর্মরোগ, হূদরোগ, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি সমস্যায় ভুগতে হয়। গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের, বিশেষ করে মেয়েদের নিপীড়নের আশঙ্কা থাকে। অনেক শিশু অগ্নিদগ্ধ হয়ে কারখানায় দুর্ঘটনা, বিষক্রিয়া, জখম ও সহিংসতায় মৃত্যুমুখে পতিত হয়। বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৪ অনুচ্ছেদে সব ধরনের জবরদস্তিমূলক শ্রমকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই শিশুশ্রমের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে গণসচেতনতা বাড়িয়ে শিশুর শিক্ষা লাভের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে।
No comments:
Post a Comment