চলমান কথা

গত ১১ মে, ২০২০ আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের অনলাইন পরীক্ষার শুভ উদ্বোধন করেন প্রকৌশলী এ এম এম সাজ্জাদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এপিএসসিএল।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু; স্বপ্ন হলো সত্যি। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সাথে স্বপ্ন যাবে বাড়ি।

Thursday, July 15, 2021

 স্বরধ্বনির উচ্চারণ

অ-ধ্বনির উচ্চারণ

শব্দে অবস্থানভেদে ‘অ’ দুইভাবে লিখিত হয়। যেমন:

১. স্বাধীনভাবে ব্যবহৃত অ। যেমন: অমর, অনেক।

২. শব্দের মধ্যে অন্য বর্ণের সঙ্গে বিলীনভাবে ব্যবহৃত অ। যেমন: কর, বল। এখানে ক ও র আর ব ও ল বর্ণের সঙ্গে অ বিলীন হয়ে আছে। (ক্+অর্++অ; ব্+অ+ল্+অ)।

 

শব্দের অ-ধ্বনির দুই রকম উচ্চারণ পাওয়া যায়

১. বিবৃত বা স্বাভাবিক(অ এর উচ্চারণ অ) উচ্চারণ। অর্থাৎ ঠোট গোল হয় না। যেমন: অমল, অনেক, কত।

২. সংবৃত বা ও-ধ্বনির মতো উচ্চারণ। অর্থাৎ ঠোট গোল হয়। যেমন: অধীর, অতুল, মন। এ উচ্চারণগুলোতে অ-এর উচ্চারণ অনেকটা ও-এর মতো (ওধীর, ওতুল, মোন)।

 

‘অ’-ধ্বনির স্বাভাবিক বা বিবৃত উচ্চারণ

ক. শব্দের আদিতে

১. শব্দের আদিতে না-বোধক ‘অ’ যেমন: অটল, অনাচার।

২. ‘অ’ কিংবা ‘আ’-যুক্ত ধ্বনির পূর্ববর্তী অ-ধ্বনি বিবৃত হয়। যেমন: অমানিশা, অনাচার, কথা।

 

খ. শব্দের মধ্যে ও অন্তে

১. পূর্ব স্বরের সঙ্গে মিল রেখে স্বরসঙ্গতির কারণে বিবৃত ‘অ’। যেমন: কলম, বৈধতা, যত, শ্রেয়ঃ।

২. ঋ-ধ্বনি, এ-ধ্বনি, ঐ-ধ্বনি এবং ঔ-ধ্বনির পরবর্তী ‘অ’ প্রায়ই বিবৃত হয়। যেমন: তৃণ, দেব, বৈধ, নোলক, মৌন।

৩. অনেক সময় ই-ধ্বনির পরের ‘অ’ বিবৃত হয়। যেমন: গঠিত, মিত, জনিত ইত্যাদি।

অ-ধ্বনির সংবৃত উচ্চারণ

অ-ধ্বনির বিবৃত উচ্চারণে চোয়াল বেশি ফাঁক হয়। ঠোঁট তত বাঁকা বা গোল হয় না। কিন্তু সংবৃত উচ্চারণে চোয়ালের ফাঁক কম ও ঠোঁট গোলাকৃত হয়ে ‘ও’-এর মতো উচ্চারিত হয়। সংবৃত উচ্চারণকে ‘বিকৃত’, ‘অপ্রকৃত’ বা ‘অস্বাভাবিক’ উচ্চারণ বলা অপ্রাসঙ্গিক। সংবৃত উচ্চারণও ‘স্বাভাবিক’, ‘অবিকৃত’ ও ‘প্রকৃত’ উচ্চারণ।

 

ক. শব্দের আদিতে

১. পরবর্তী স্বর সংবৃত হলে শব্দের আদি ‘অ’ সংবৃত হয়। যেমন: অতি (ওতি), করুণ (কোরুণ), করে (অসমাপিকা ‘কোরে’)। কিন্তু সমাপিকা ‘করে’ শব্দের ‘অ’ বিবৃত।

২. পরবর্তী ই, উ ইত্যাদির প্রভাবে পূর্ববর্তী র-ফলাযুক্ত ‘অ’ সংবৃত হয়। যেমন: প্রতিভা (প্রোতিভা), প্রচুর (প্রোচুর) ইত্যাদি। কিন্তু অ, আ ইত্যাদির প্রভাবে পূর্ব ‘অ’ বিবৃত হয়। যেমন: প্রভাত, প্রত্যয়, প্রণাম ইত্যাদি।

৩. শব্দের আদ্য ‘অ’-এর পরে ‘য’ফলা যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ থাকলে সে ক্ষেত্রে ‘অ’-এর উচ্চারণ ‘ও’ কারের মতো হয়। যেমনঅদ্য (ওদদো), কন্যা (কোননা) ইত্যাদি।

৪. ‘অ’-এর পরে ‘ক্ষ’ থাকলে সে ক্ষেত্রে ‘অ’-এর উচ্চারণ ‘ও’ ধ্বনির মতো হয়। যেমনঅক্ষ (ওকখো), দক্ষ (দোকখো) ইত্যাদি।

৫. শব্দের প্রথমে ‘অ’-যুক্ত ‘র’ ফলা থাকলে সে ক্ষেত্রেও আদ্য ‘অ’-এর উচ্চারণ ‘ও’কারের মতো হয়। যেমনক্রম (ক্রোমো), ব্রত (ব্রোতো) ইত্যাদি।

 

খ. শব্দের মধ্যে ও অন্তে

১. তর, তম, তন প্রত্যয়যুক্ত বিশ্লেষণ পদের অন্ত্য স্বর ‘অ’ সংবৃত হয়। যেমন: প্রিয়তম (প্রিয়তমো), গুরুতর (গুরুতরো)।

২. ই, উ-এর পরবর্তী মধ্য ও অন্ত্য ‘অ’ সংবৃত। যেমন: পিয় (পিয়ো), যাবতীয় (যাবতীয়য়ো) ইত্যাদি।

 

বাংলায় একাক্ষর / Monosyllabic শব্দে ‘অ’ দীর্ঘ হয়। যেমন: কাজ শব্দের ‘অ’ দীর্ঘ এবং কাল শব্দের ‘আ’ হ্রস্ব। এরূপ: যা, পান, ধান, সাজ, চাল, চাঁদ, বাঁশ।

ই ঈ: বাংলায় সাধারণত হ্রস্ব ই-ধ্বনি এবং দীর্ঘ ঈ-ধ্বনির উচ্চারণে কোনো পার্থক্য দেখা যায় না। একাক্ষর শব্দের ই বা ঈ-দুটোই দীর্ঘ হয়। যেমন: বিষ, বিশ, দীন, দিন, শীত।

উ ঊ: বাংলায় উ বা ঊ ধ্বনির উচ্চারণে তেমন কোনো পার্থক্য দেখা যায় না। ই বা ঈ-ধ্বনির মতো একাক্ষর শব্দে এবং বহু অক্ষর-বিশিষ্ট বদ্ধাক্ষরে বা প্রান্তিক যুক্তাক্ষরে উচ্চারণ সামান্য দীর্ঘ হয়। যেমন: চুল (দীর্ঘ), চুলা (হ্রস্ব), ভূত, মুক্ত, তুলতুলে, তুফান, বহু, অজু, করুণ।

ঋ: স্বাধীনভাবে ব্যবহৃত হলে ঋ-এর উচ্চারণ রি অথবা রী-এর মতো হয়। আর ব্যঞ্জন ধ্বনির সঙ্গে যুক্ত হয়ে ব্যবহৃত হলে র-ফলা+ই-কার এর মতো হয়। যেমন: ঋণ, ঋতু, (রীন, রীতু), মাতৃ (মাত্রি), কৃষ্টি (ক্রিষ্টি)।

 

এ-ধ্বনির উচ্চারণ

সংস্কৃত প্রয়োগ অনুসারেই বাংলা বর্ণমালায় এটি স্বরবর্ণের মধ্যে রক্ষিত হয়েছে।

এ: এ-ধ্বনির উচ্চারণ দুই রকম: সংবৃত ও বিবৃত। যেমন: মেঘ, সংবৃত/বিবৃত, খেলা (খ্যালা), বিবৃত।

১. সংবৃত

ক. পদের অন্তে ‘এ’ সংবৃত হয়। যেমন: পথে, ঘাটে, দোষে, গুণে, আসে ইত্যাদি।

খ. তৎসম শব্দের প্রথমে ব্যঞ্জনধ্বনির সঙ্গে যুক্ত ধ্বনির উচ্চারণ সংবৃত হয়। যেমন: দেশ, প্রেম, শেষ ইত্যাদি।

গ. একাক্ষর সর্বনাম পদের ‘এ’ সংবৃত হয়। যেমন: কে, সে, যে।

ঘ. ‘হ’ কিংবা আকারবিহীন যুক্তধ্বনি পরে থাকলে ‘এ’ সংবৃত হয়। যেমন: দেহ, কেহ, কেষ্ট।

ঙ. ‘ই’ বা ‘উ’-কার পরে থাকলে ‘এ’ সংবৃত হয়। যেমন: দেখি, রেণু, বেলুন।


২. বিবৃত:

‘এ’ ধ্বনির বিবৃত উচ্চারণ ইংরেজি ক্যাট/ cat ও ব্যাট / bat -এর ‘এ’ /ধ-এর মতো। যেমন: দেখ (দ্যাখ), একা (এ্যাকা) ইত্যাদি।

ধ্বনির এই বিবৃত উচ্চারণ কেবল শব্দের আদিতেই পাওয়া যায়, শব্দের মধ্যে ও অন্তে পাওয়া যায় না।

ক. দুই অক্ষর বিশিষ্ট সর্বনাম বা অব্যয় পদে। যেমন: এত, হেন, কেন ইত্যাদি। কিন্তু ব্যতিক্রম-যেমন, সেথা, হেথা।

খ. অনুস্বার ও চন্দ্রবিন্দু যুক্ত ধ্বনির আগের ধ্বনি বিবৃত। যেমন: খেংড়া, চেংড়া, স্যাঁতসেঁতে, গেঁজেল।

গ. খাঁটি বাংলা শব্দ। যেমন: খেমটা, ঢেপসা, তেলাপোকা, তেনা, দেওর।

ঘ. এক, এগার, তের কয়টি সংখ্যাবাচক শব্দে। ‘এক’ যুক্ত শব্দেও। যেমন: একচোট, একতলা, একঘরে ইত্যাদি।

ঙ. ক্রিয়াপদের বর্তমান কালের অনুজ্ঞায়, তুচ্ছার্থ ও সাধারণ মধ্যম পুরুষের রূপে। যেমন: দেখ্ (দ্যাখ), দেখ (দ্যাখো), খেল্ (খ্যাল), খেল (খ্যালো), ফেল (ফ্যাল), ফেল (ফ্যালো) ইত্যাদি।

 

ঐ: ধ্বনিটি একটি যৌগিক স্বরধ্বনি। অ+ই কিংবা ও+ই=অই, ওই। অ, ই দুটো স্বরের মিলিত ধ্বনিতে ঐ-ধ্বনির সৃষ্টি হয়। যেমন: ক +অ+ই=কই/কৈ, বৃ +ই+ধ=বৈধ ইত্যাদি। এরূপ: বৈদেশিক, ঐক্য, চৈতন্য।

ও: বাংলা একাক্ষর শব্দে ও-কার দীর্ঘ হয়। যেমন: গো, জোর, রোগ, ভোর, কোন, বোন ইত্যাদি অন্যত্র সাধারণত হ্রস্ব হয়। যেমন: সোনা, কারো, পুরোভাগ। ও-এর উচ্চারণ ইংরেজি বোট / boat শব্দের / oa -এর মতো।

--যবনিকা পাত--

Friday, May 21, 2021

তোমার এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা জানিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশের উপযোগী একটি পত্র লেখ।
 
২০ মে, ২০২১খৃ:
সম্পাদক,
দৈনিক ইত্তেফাক,
১, রামকৃষ্ণ মিশন রোড,
ঢাকা-১২০৩।
 
বিষয়: চিঠিপত্র কলামে নিচের সংবাদটি প্রকাশের আবেদন।
 
জনাব,
আপনার সম্পাদিত বহুল প্রচলিত দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সংশ্লিষ্ট বিভাগে নিম্নোক্ত পত্রটি প্রকাশ করে এলাকাবাসীর উপকারে অবদান রাখার জন্যে অনুরোধ জানাচ্ছি।
 
নিবেদক-
মো: রহমান
ডহরপাড়া, বরিশাল।
 
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি চাই
বরিশাল জেলার উজিরপুর থানার অন্তর্গত ডহরপাড়া একটি গ্রাম। এই গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে শান্তিতে বসবাস করে আসছিল। এলাকার বেশির ভাগ লোক শিক্ষিত এবং কৃষি, শিল্প, মৎস্য চাষসহ নানাবিদ পেশায় নিয়োজিত। তাছাড়া অনেক ব্যবসায়ী এ গ্রামে বসবাস করে। অনেক শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে ডহরপাড়া অঞ্চলে। ফলে এখানে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত নানা ধরনের পেশার মানুষের সমাবেশ ঘটে। আস্তে আস্তে পরিবেশ ঘোলাটে হয়ে ওঠে। জমে ওঠে নেশার আড্ডা। নানা ধরনের অপকৃীর্তি শুরু হয় সমাজে। সন্ধ্যার পর রাস্তায় বের হলেই সন্ত্রাসী, নেশাখোর, চাঁদাবাজ আর ছিনতাইকারীর খপ্পরে পড়তে হয়।মেয়েরা স্কুল-কলেজে যাওয়ার পথে বকাটে ছেলেদের দ্বারা উত্যক্ত হয়ে থাকে। এলাকা থেকে থানা সদর অনেক দূরে  হওয়ায় বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এত অবনতি হয়েছে যে, ঘর থেকে বের হওয়াই দায় হয়ে পড়েছে। চাঁদাবাজদের ভয়ে ঘরে বসেও মানুষ আজ স্বস্থির নিঃশ্বাস নিতে পারছে না। সারাক্ষণ একটা আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকায়। কখন কী জানি হয়ে যায়। প্রতিনিয়ত পক্ষ-বিপক্ষের মধ্যে মারামারি, ডাঙ্গা-হাঙ্গামা লেগেই আছে। অত্র অঞ্চলে বসবাস করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
 
এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমার সবিনয় অনুরোধ, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে অত্র অঞ্চলের জনগণকে শান্তিতে বসবাস করতে দিন।
 
নিবেদক-
এলাকাবাসীর পক্ষে-
মো: মোহায়মিন
 

 

প্রেরক,
মো: মোহায়মিন
গ্রাম: ডহরপাড়া
পো: ডহরপাড়া
উপজেলা: উজিরপুর
জেলার: বরিশাল-৮২০০।

ঢাক টিকেট


প্রাপক,
সম্পাদক,
দৈনিক ইত্তেফাক,
১, রামকৃষ্ণ মিশন রোড,
ঢাকা-১২০৩।

Thursday, May 20, 2021

 

 


 

প্রতিশোধ নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই,
শুধু চুপচাপ বসে অপেক্ষা করো;
যারা তোমাকে আঘাত করেছে,
তারা নিজেরাই শাস্তি পাবে।
আর যদি তুমি ভাগ্যবান হও,
তাহলে তুমি নিজে চোখে দেখতে পাবে।
         - এ. পি. জে. আব্দুল কালাম। 

 


Wednesday, May 19, 2021

 পথশিশু 
 
সাধারণত যেসব শিশু পথেঘাটে অবস্থান করে তাদের পথশিশু বলে। এসব শিশুর অনেকেই মা-বাবা হারা। কারো মা থাকলেও বাবা নাই। আবার মা মরা শিশুরাও বাবার অবহেলায় পথশিশুতে পরিণিত হয়। এই পথশিশুরা 'টোকাই' নামে পরিচিত। এরা অবহেলিত ,অধিকারবঞ্চিত। সমাজের বিত্তবানরা এদের প্রতি উদাসীন। আবার সরকারও এদের দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করার ক্ষেত্রে তেমন উদ্যোগী না হওয়ায় এসব শিশু লেখাপড়া থেকে বঞ্চিত হয়। কেউ কেউ অপুষ্টিতে ভুগে বিকলাঙ্গ হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে। এদের কেউ কেউ রাস্তায় কাগজ কুড়িয়ে ,ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করে। ফুটপাত ,দোকানের পাশে বা স্টেশনের প্ল্যাটফরমে এরা রাত কাটায়। ডাস্টবিনের অখাদ্য -কুখাদ্য খেয়ে এরা বেড়ে ওঠে। পথশিশুরা আমাদের দেশেরই সন্তান। এরা উপযুক্ত পরিচর্যা ও শিক্ষা পেলে দেশের দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত হতে পারে। এদের প্রতি বিত্তবান ও সরকারের সুদৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। না হলে এসব সুবিধাবঞ্চিত শিশু বড় হয়ে সন্ত্রাস ,চুরি -ডাকাতি ও অসামাজিক কাজে লিপ্ত হওয়ায় আশঙ্কা রয়েছে।

 #   বেকার সমস্যার কারণ ও প্রতিকার জানিয়ে পত্রিকায় প্রকাশের জন্য প্রতিবেদন রচনা কর।

 
প্রতিবেদনের প্রকৃতি             : বিশেষ প্রতিবেদন/সংবাদ প্রতিবেদন
প্রতিবেদনের শিরোনাম         : বেকারত্ব জাতির জন্য অভিশাপ
সরোজমিনে পরিদর্শন           : এই বিষয়ে সংশিষ্টদের সাক্ষাৎকার
প্রস্তুতের সময় ও তারিখ        : রাত ৯টা, ১৮ মে, ২০২১
প্রতিবেদকের নাম               : মুমতারিন মালিহা
 
বেকারত্ব জাতির জন্য অভিশাপ

বেকারত্ব প্রতিটি জাতির জন্য অভিশাপ। কারণ মানুষ ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কাজের সুযোগ না পেলে মেধা ও সামর্থ্যরে অপচয় ঘটে। বেকারত্ব তরুণ সমাজের মধ্যে ভয়াবহ হতাশা তৈরি করে। এতে একদিকে তারুণ্যের অপচয় ঘটে, অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে। বেকারত্ব অসংখ্য সামাজিক সমস্যার জন্ম দেয়। এককথায় বেকারত্বের সংজ্ঞা দেয়া কঠিন, তবে বলা যায়, যার কর্ম নেই, সে বেকার। আর বেকার ব্যক্তির অবস্থানকেই বেকারত্ব বলে। অর্থাৎ কর্মক্ষম ব্যক্তির কর্মহীনতা হলো বেকারত্ব। সুস্থ, কর্মক্ষম ব্যক্তির কাজ করার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ব্যক্তির কর্মসংস্থানের অভাবকে বেকারত্ব বলে। তবে, পঙ্গু, প্রতিবন্ধী, অক্ষম, শিশু বা বৃদ্ধের কর্মহীনতাকে বেকারত্ব বলা যায় না।

বেকারত্বের কারণসমূহ:

বাংলাদেশে বেকারত্ব একটি গুরুতর আর্থ-সামাজিক সমস্যা, এই সমস্যা কোন একক কারণে সৃষ্টি হয়নি। এই সমস্যার বহুবিধ কারণ রয়েছে। নিম্নে বেকারত্বের কারণসমূহ আলোচনা করা হলো:


১. বাংলাদেশে বেকারত্বের প্রধান কারণ হচ্ছে জনসংখ্যা বৃদ্ধি। বাংলাদেশে যে হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে সে হারে বিনিয়োগ না হওয়ায় ক্রমান্বয়ে বেকারত্ব বাড়ছে। এ দেশে প্রতি বছর শতকরা ১.৪৮ হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ফি বছর সাড়ে সাত লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রয়োজন।

২. বাংলাদেশের কর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস হচ্ছে কৃষি। কৃষি ঋতুকালীন কর্মকা- দ্বারা প্রভাবিত। বাংলাদেশের বেকারত্বের ক্ষেত্রে ঋতুকালীন প্রভাব বিশেষভাবে বিদ্যমান। তাই মৌসুমী বেকারের প্রধান কারণ প্রকৃতি নির্ভর কৃষি ব্যবস্থা।

৩. বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো অনুন্নত ও কৃষিনির্ভর। ফলে এদেশে অধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ কম। তাই এদেশে বেকারত্ব বাড়ছে।

৪. রাজনৈতিক অস্থিরতা, বাস্তবমুখী শিল্পনীতির অনুপস্থিতি, বিদেশী সাহায্য ও প্রযুক্তিনির্ভর অপরিকল্পিত শিল্পায়ন প্রক্রিয়া, ক্রমবর্ধমান শ্রমশক্তির কর্মসংস্থান না হওয়ায় বেকারত্ব ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

৫. বাংলাদেশের অধিকাংশ লোক কৃষির উপর নির্ভরশীল, ফলে এদেশে অর্ধ বেকারত্ব বা প্রচ্ছন্ন বেকারত্ব দেখা যায়।

৬. আমাদের মত অনুন্নত ও জনবহুল দেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে কুটির শিল্পের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু শিল্পায়নের ফলে এদেশে কুটির শিল্পের প্রায় অবলুপ্তি ঘটেছে। আর কুটির শিল্পে নিয়োজিত লক্ষ লক্ষ লোক বেকার হয়ে পড়েছে।

৭. বর্তমান বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির যুগে বাংলাদেশের শ্রমজীবী শ্রেণীর প্রায় সবাই নিরক্ষর এবং কারিগরি জ্ঞান ও দক্ষতা বর্জিত। সেজন্য বাইরে যেমন তারা কর্মসংস্থান করতে পারে না, তেমনি নিজেরাও কিছু করে বাঁচতে পারে না।

৮. বাংলাদেশে প্রতি বছর নদীর ভাঙ্গন, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, প্রভৃতি আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত কারণে বিপুল পরিমাণে কৃষি শ্রমিক বেকারত্বের শিকার হচ্ছে।

৯. বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় কম বলে মাথাপিছু সঞ্চয়ও অত্যন্ত কম। তাই মূলধন সৃষ্টি হচ্ছে না। মূলধনের অভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না। ফলে বেকারত্ব বাড়ছে।

১০. আমাদের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। কিন্তু রক্ষণশীলতা ও উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে নারীদের বৃহৎ অংশ গৃহবন্দি। অর্থকরী কাজের ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় তাদের বেকার জীবন যাপন করতে হয়।

১১. দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং প্রশাসনিক রদবদলের ফলে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক কাঠামো ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে, যা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে অক্ষম।


বেকার সমস্যা সমাধানের উপায়সমূহ:

বেকারত্ব বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক জীবনে এক প্রকট সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত। তাই এই সমস্যার সমাধান দেশের কল্যাণে একান্ত অপরিহার্য। নিম্নলিখিত উপায়ে বাংলাদেশের বেকার সমস্যা সমাধান করা যায়-

১. সামাজিক জরিপের মাধ্যমে দেশের প্রকৃত বেকারের সংখ্যা, বেকারত্বের ধরন, তার প্রকৃত কারণ প্রভৃতির একটি তালিকা তৈরি করে সেই অনুযায়ী শ্রমের যোগান দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ জরুরি।

২. আমাদের দুর্বল ও নড়বড়ে অর্থনৈতিক কাঠামোর উন্নয়ন সাধন করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। সেইজন্য উন্নয়নমুখী পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কাঠামোকে সদৃঢ় করতে হবে।

৩. শিল্পোন্নয়ন ছাড়া বাংলাদেশের বেকার সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। তাই সুপরিকল্পিতভাবে শিল্পোন্নয়ন করে এদেশে বেকার সমস্যার সমাধান করতে হবে।

৪. বাংলাদেশের বেকারত্ব দূর করতে কুটির শিল্পের পুনরুদ্ধার একান্ত প্রয়োজন এবং সাথে সাথে এর উন্নয়নও দরকার, যাতে এদেশের দরিদ্র জনগণ তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে সাময়িক বেকারত্বের সময় উপার্জনের সুযোগ লাভ করতে পারে।

৫. দেশের জনসংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে সে তুলনায় কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় বেকারত্ব বাড়ছে, তাই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে বেকার সমস্যার সমাধান করতে হবে।

৬. আমাদের অধিকাংশ জমিতে বছরে মাত্র একবার ফসল ফলানো হয়। তাই অন্য মৌসুমে কৃষকরা বেকার হয়ে পড়ে। এ সকল জমিতে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ফসলের চাষের ব্যবস্থা করে বেকারত্ব দূর করা যায়।

৭. আমাদের জনশক্তির অর্ধেক স্থান নারীরা দখল করে আছে। কিন্তু পর্দা-প্রথা, কুসংস্কার ইত্যাদির কারণে তাদের বৃহৎ অংশ ঘরে আবদ্ধ হয়ে আছে। ঐ সব কুসংস্কার দূর করে তাদের কর্মোৎসাহী করতে হবে এবং পুরুষের পাশাপাশি তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।

৮. জনশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব এবং তাতে বেকারত্বও দূর করা যায়। তাই পরিকল্পিত পরিকল্পনা এবং সরকারি নীতিমালার অধীনে বিদেশে জনশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক বেকারের কর্মসংস্থান করা সম্ভব।

৯. স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগের মাধ্যমে ছোট ছোট স্বকর্ম প্রকল্প গ্রহণে গামীণ এবং শহুরে জনগণকে আর্থিক সাহায্য দানের ব্যবস্থা করে বেকারত্ব সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।

১০. বেকারত্ব সমাধানের জন্য বাংলাদেশে জাতীয় কর্মসংস্থান নীতি প্রণয়ন করা দরকার, কারণ শুধু বিচ্ছিন্ন এবং অসংগঠিত কিছু কর্মসূচির মাধ্যমে বেকারত্বের ন্যায় ব্যাপক সমস্যার সমাধান আশা করা যায় না।


পরিশেষে বলা যায়, বেকারত্ব দূর করা সহজ বা কোনো যাদু ভাবা ঠিক হবে না। উপর্যুক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করে, দীর্ঘ মেয়াদী কর্মসূচি হাতে নিলে এ সমস্যা সমাধান করা যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।


প্রতিবেদক-
মো: আবুল খায়ের
পাধবপাশা, বরিশাল।


প্রেরক,
মো: আবুল খায়ের
গ্রাম: পাধবপাশা, 
পো: মাধবপাশা
বরিশাল।

                               ঢাক টিকেট

প্রাপক,
সম্পাদক,
দৈনিক উত্তেফাক,
১, রামকৃষ্ণ মিশন রোড, 
ঢাকা-১২০৩।

Tuesday, May 18, 2021

#   তোমার এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
 
১৮/০৪/২০১৫
সম্পাদক,
দৈনিক জনকন্ঠ
২৪/এ নিউ ইস্কাটন রোড, ঢাকা।
বিষয়: বিষয়: আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন পত্রিকায় প্রকাশ প্রসঙ্গে।
 
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকাধীন উত্তরা ৭ নং সেক্টর একালায় গত তিন চার মাস যাবৎ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই চরম অবনতির পর্যায়ে আছে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে সাধারণ মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছে। এমতাবস্থায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংযোজিত প্রতিবেনদটি আপনার বহুল প্রচারিত পত্রিকায় প্রকাশ করে বাধিত করবেন।
 
ক্রমাবনতিশীল উত্তরা থানার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি
ঢাকা জেলার আওতাধীন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এর ৭ নং সেক্টর অর্থাৎ বাড্ডা থানা একটি গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকা। এক সময়ে ঢাকার অন্যতম শান্ত এলাকা হিসেবে আলোচিত এই থানাটির আইনশৃঙ্খলা বর্তমানে খুবই খারাপ। বিশেষ করে খিলক্ষেত, আজমপুর, দঃ খান, উঃ খান এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। এরকম পরিস্থিতিতে একদল সুবিধাবাদী মানুষ তাদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে নানারকম সুযোগ গ্রহণ করছে। ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌছেছে। অন্যদিকে গত ১৫ দিনে রাজনৈতিক সন্ত্রাসে নিহত হয়েছে ৬ জন এবং আহত ৫০ এর অধিক। ইদানিং দুর্বৃত্ত চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যও যথেষ্টরূপে বৃদ্ধি পেয়েছে। যখন তখন তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কিংবা মালিকদের বাসায় হামলা চালায় । চাঁদা দিতে কেউ গড়িমসি করলে তাদের সন্তানদের অপহরণ ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। স্কুল শিক্ষার্থী মেয়েরাও বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে বখাটে ছেলেরা স্কুলগামী মেয়েদের বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করছে। ফলে অভিভাবকগণ তাদের মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে নিরাপদ বোধ করছে না।
 
রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকা হিসেবে পরিচিত উত্তরা এলাকার বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন অবনতির কারণে এলাকার অনেক পরিবারই চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
এমতাবস্থায় চলতি মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের লক্ষ্যে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে একটি সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গঠিত হয়। প্রথম ‍দু-তিন দিন এর প্রভাব সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও গত সপ্তাহে সন্ত্রাসীদের গুলিতে এ কমিটির সভাপতি নিহত হন। এরপর থেকে জনগণ ভয়ে ভীত হয়ে পড়েছে। ফলে সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটির কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে পড়েছে। ফলে বর্তমানে এ এলাকা সন্ত্রাসী চক্রের অভয়ারণ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


এমন পরিস্থিতিতে এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয়ের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।অনতিবিলম্বে যথাযথ ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এ এলাকায় সাধারণ মানুষের বসবাস অসম্ভব হয়ে পড়বে।

নিবেদক-


প্রতিবেদনের শিরোনাম               :"ক্রমাবনতিশীল উত্তরা থানার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি"
প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা        :রিয়াজ রহমান, দক্ষিণ খান বাজার, ঢাকা।
প্রতিবেদন তৈরির সময়              :১৮ মার্চ, ২০১৫ ইং, সকাল ১০:৪৫ ঘটিকা।
প্রতিবেদন জমার তারিখ             :২২ এপ্রিল, ২০১৫ ইং ।

Saturday, May 15, 2021

   শিশুশ্রম বন্ধের আবশ্যকতা তুলে ধরে পত্রিকায় প্রকাশের জন্যে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।

 প্রতিবেদনের শিরোনাম      :"শিশুশ্রম বন্ধ কর; সমৃদ্ধ জাতি গড়"

প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা      :রিয়াজ রহমান, দক্ষিণ খান বাজার, ঢাকা।
প্রতিবেদন তৈরির সময়            :১৮ মার্চ, ২০১৫ ইং, সকাল ১০:৪৫ ঘটিকা।
প্রতিবেদন জমার তারিখ           :২২ এপ্রিল, ২০১৫ ইং ।

শিশুশ্রম বন্ধ কর; সমৃদ্ধ জাতি গড়
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম। ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯: সবচেয়ে খেতে ভাল মানুষের রক্ত- কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের এই কথার বাস্তব চিত্র সমাজ, রাষ্ট্র তথা সমগ্র বিশ্বেই স্পষ্ট। ফুলকলিসম শিশুদের শৈশব নিংড়ে নিংড়ে বর্তমান পুঁজিবাদী সমাজ প্রাচুর্যের পাহাড় গড়ছে, অথচ শৈশব একজন মানুষের জীবন গঠনের প্রারম্ভ মুহূর্ত। নিজের বুদ্ধিমত্তা ও প্রতিভার খোজ মানুষ এ বয়সেই পেয়ে থাকে।
 
শিশুদের শ্রমবৃত্তিতে নিয়োগ প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। বর্তমানে যারা নিজেদেরকে সভ্য বলে দাবি করে এবং পৃথিবীতে আদর্শের ঝান্ডা উড়ানোর প্রতিশ্রুতিবন্ধ হয়, তারাও শিশুদের শৈশব নিয়ে অর্থের লোভে ছিনিমিনি খেলে। সারাদিন চৌদ্দ থেকে ষোলো ঘণ্টা পরিশ্রম করে শিশুরা যে পারিশ্রমিক লাভ করে, তা দিয়ে সামান্য খাবারও জোটানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। উপরন্তু পরিশ্রমের সাথে সংযোগ হয় নানারূপ শারীরিক ও মানসিক লাঞ্ছনা। ফলে শ্রমজীবী শিশুদেরকে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হয়।
 
পোশাক শিল্প, চামড়া শিল্প, নির্মাণ শিল্প, হোটেল, রেস্তোরা, যানবাহন ইত্যাদি খাতে শিশুরা শ্রম বিক্রি করে থাকে। মূলত দরিদ্রতার কশাঘাতেই পিতামাতারা তাদের শিশুদেরকে শ্রমে নিয়োজিত করেন। আর পুঁজিপতি ধনিক শ্রেণি এদের শ্রমকে সামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে ক্রয় করে।
 
শৈশবকালে শিক্ষার আলো আহরণের বদলে কঠিন শ্রমে জড়িয়ে থাকা এসব শিশুর বুদ্ধির স্বাভাবিক বিকাশ হয় না। শিক্ষার আলো বিবর্জিত পরিবেশে এরা অশিক্ষিত, গোঁড়া ও দুশ্চরিত্র হিসেবে বেড়ে ওঠে। ফলে সমাজে সৃষ্টি হয় সন্ত্রাস, চুরি, ডাকাতির মতো নৃশংস ঘটনার সূত্রপাত এবং অশিক্ষিত এ সমস্ত মানুষ তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও শিক্ষার দিকে ধাবিত করে না।
 
আমাদের সমাজ ও জাতিকে আলোকিত পথে পরিচালিত করতে হলে ও দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হলে শিশুশ্রম বন্ধ করতে হবে। ধনিক শ্রেণির অধিক মুনাফা অর্জনের লোভকে সংযত করতে হবে এবং পিতামাতাকে তাদের সন্তানের শিক্ষার ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে। সমাজে দরিদ্র শ্রেণির জন্য অবৈতনিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং এ ব্যাপারে সরকারকে বিভিন্ন নীতিমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ আজকের শিশুরাই আগামী দিনের জাতির ভবিষ্যৎ। সুতরাং ভবিষ্যৎকে আলোকিত করতে চাইলে অভিভাবক, সমাজ ও সরকারকে সহানুভূতির হাত বাড়াতে হবে এবং শিশুশ্রম বন্ধের মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে শৈশবের আলোকিত আঙ্গিনা।
 

প্রতিবেদক

   তোমার বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।

 

২৫.০৩.২০২১
প্রধান শিক্ষক,
ফুলবাড়ীয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়,
ফুলবাড়ীয়া, ময়মনসিংহ।
 
বিষয়: বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ সম্পর্কে প্রতিবেদন।
 

জনাব,

আপনার আদেশ (নং বা, স,/১৬.০৩.২০২১) অনুসারে আমি ফুলবাড়ীয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ সম্পর্কে সরেজমিনে অনুসন্ধান মূলক একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছি। অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী,শিক্ষক, অবিভাবক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতামতের ডিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদন নিচে উপম্থাপন করা হল-

1.       শ্রেণিকক্ষের স্থানের তুলনায় শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু তদারকি করা শিক্ষকের পক্ষে সম্ভব হয় না।

2.      প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফ্যান না থাকায় গরমে ক্লাস করায় শিক্ষার্থীদের বেশ অসুবিধা হচ্ছে।

3.      বিজ্ঞান গবেষণাগারে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকায় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানের জটিল বিষয়গুলো হাতে-কলমে শিখতে পারছেনা।

4.       বিদ্যালয় ম্যাগাজিন নিয়মিতভাবে প্রকাশ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের সাহিত্যচর্চার বিকাশ হচ্ছে না।

5.      নিয়মিত পাঠদানের পাশাপাশি সহশিক্ষার কর্মকাণ্ড নেই বললেই চলে। ফলে শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা ও মননশীলতার বিকাশ ধারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

6.      সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যবস্থা নেই। ফলে বাঙালির নিজস্ব ঐতিহ্য শিক্ষার্থীরা লালন করতে পারছে না বিধায় তার বিরূপ প্রভাব তাদের আচরণে স্পষ্ট।

7.      শিক্ষার্থী বান্ধব পরিবেশ নেই। ফলে মেধার যথাযথ বিকাশ হচ্ছে না।  

8.      বর্ষাকালে বিদ্যালয় মাঠে পানি জমে থাকায় শিক্ষার্থীদের চলাফেরা করতে ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে।

9.      কয়েকটি বিষয়ের শিক্ষক স্বল্পতা রয়েছে, যার কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান বিলম্বিত হচ্ছে।

10.   শিক্ষার্থীরা উৎসাহী হওয়া সত্ত্বেও খেলার পরিবেশ ও পৃষ্ঠপোষকতা নেই বললেই চলে। ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সঠিকভাবে হচ্ছে না।

11.   বিদ্যালয়ের মেয়ে শিক্ষার্থীরা প্রায়ই বহিরাগতদের দ্বারা লাঞ্ছিত ও কটূক্তির শিকার হয়। এজন্য বহিরাগতদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করতে হবে।

12.   ছাত্র রাজনীতির নামে বখাটে ও মাস্তানদের দ্বারা প্রায়ই মারামারি ও অম্বাভাবিক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

13.  বিদ্যালয়ে পানীয় জলের সুব্যবস্থা নেই বললেই চলে। একটি টিউবওয়েল থাকলেও অধিকাংশ সময়ই তা নষ্ট থাকে।

14.   বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি কেন্টিনের ব্যবস্থ্যা করা অতীব জরুরি।

সার্বিকভাবে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ খুবই নাজুক। উর্পযুক্ত বিষয় গুলোর সুষ্ঠু সমাধানে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত হবে বলে আশা রাখি।

 প্রতিবেদক-
মো: মোতাহার আলী

Thursday, May 13, 2021

তোমার বিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠানের বর্ণনা দিয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট প্রতিবেদন রচনা কর।

১০ মে, ২০১৬
প্রধান শিক্ষক
‘ক’ উচ্চ বিদ্যালয়
ঢাকা-১২০৬
 
বিষয়: বাংলা নববর্ষ বরণ উপলক্ষে বিদ্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালা প্রসঙ্গে প্রতিবেদন।
 
জনাব,
আপনার দ্বারা আদিষ্ট হয়ে আমাদের বিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দিনব্যাপী আয়োজিত কর্মসূচি সম্পর্কে নিম্নোক্ত বক্তব্য রাখছি।
 
v  স্বল্পপরিসরে আয়োজিত হলেও অনুষ্ঠানে ছিল সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও পরিচালনার ছাপ। প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থী বর্ষবরণ অনুষ্ঠানমালায় স্বতঃস্ফূর্ত ভূমিকা রাখে।
 
v  উপস্থিত সবার সাজসজ্জায় ফুটে ওঠে বাঙালি জাতির ঐতিহ্য। ছাত্র ও শিক্ষকরা পরেন লাল-সাদা পাঞ্জাবি ও পায়জামা। আর ছাত্রী-শিক্ষিকারা পরেন ঐতিহ্যবাহী লাল পেড়ে সাদা শাড়ি আর খোঁপায় বেলি ফুলের মালা।
 
v  সকাল ৭টায় বিদ্যালয় থেকে বের হয় শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীদের সুশৃঙ্খল বর্ণিল শোভাযাত্রা।
 
v  সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে সূচনা ঘটে আলোচনা সভার। স্কুল মিলনায়তনে আয়োজিত এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব কবি ও লেখক আসাদ চৌধুরী।
 
v  শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি সভায় উপস্থিত ছিলেন আমন্ত্রিত অভিভাবকরা।
 
v  আলোচনা শেষে ৯ ঘটিকায় আরম্ভ হয় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সমবেত কণ্ঠে ‘এসো হে বৈশাখ, এসো, এসো’ গেয়ে স্বাগত জানানো হয় নববর্ষকে।
 
v  তারপর একে একে পরিবেশিত হয় রোমাঞ্চকর কবিতা পাঠ, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি, নৃত্য ও নাটক।
 
v  স্কুলমাঠে আয়োজিত হয় দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার। এই আনন্দময় মেলায় সবার চিত্তকর্ষণ করে পুতুলনাচ।
 
v  এ ছাড়া বাংলা ও বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘পান্তা ইলিশ’ খাওয়ার ব্যবস্থা অনুষ্ঠানে নতুন মাত্রা যোগ করে। প্রকৃতপক্ষে পুরো দিনটিতে পরিলক্ষিত হয় বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য; সব কর্মকাণ্ডে প্রতিফলিত হয় বাঙালি জাতির কৃষ্টি-সংস্কৃতি।
 
সার্বিক বিবেচনায় নববর্ষ উপলক্ষে দিনব্যাপী আয়োজিত কর্মকাণ্ড সবাইকে আনন্দ দেয় ও মুগ্ধ করে। এই আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে বেশ সুশৃঙ্খল ও আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে।
 
প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা:
ফেরদৌসী শারমিন
‘ক’ উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা-১২০৬
প্রতিবেদনের শিরোনাম: বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালা
প্রতিবেদক তৈরির সময়: সকাল ১০ ঘটিকা
তারিখ: ১০.০৫.২০১৬