‘দুর্নীতি ও তার প্রতিকার’ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
প্রতিবেদনের প্রকৃতি : বিশেষ প্রতিবেদন/সংবাদ প্রতিবেদন
প্রতিবেদনের শিরোনাম : দুর্নীতি ও তার প্রতিকার
সরোজমিনে পরিদর্শন : এই বিষয়ে সংশিষ্টদের সাক্ষাৎকার
প্র¯‘তের সময় ও তারিখ : রাত ৯টা, ১৮ জুন, ২০১৮
প্রতিবেদকের নাম : মুমতারিন মালিহা
দুর্নীতি ও তার প্রতিকার
ঊাংলাদেশ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত
তৃতীয় বিশ্বের একটি অন্যতম দরিদ্র দেশ। এদেশে অনেক সমস্যার মধ্যে অন্যতম প্রধান সমস্যা
দুর্নীতি। সমাজ জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিস্তার লাভ করেছে দুর্নীতির কালো থাবা। ফলে
ভেঙে পড়েছে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা। দুর্নীতির কারণেই স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরেও বাংলাদেশের
অর্থনীতি ও মানুষের জীবনযাত্রার মান অনুন্নত রয়ে গেছে। স্বাধীনতার সত্যিকারের সাধ পাওয়া
হয়ে ওঠে নি।
দুর্নীতির স্বরূপ:
০১. অধিকাংশ সরকারি অফিস-আদালত দুর্নীতিতে
ছেয়ে গেছে। ঘুষ ব্যতীত কোথাও কোনো কর্মকাণ্ড সম্পন্ন হয় না। মাসের পর মাস ফাইল আটকা
রাখা হয় ঘুষের আশায়।
০২. উন্নত বিশ্বে পুলিশ জনগণের বন্ধু
হলেও এদেশে পুলিশ ঘুষদাতা, দুর্নীতিবাজ শয়তানের বন্ধু ও আশ্রয়দাতা। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা
পুলিশকে ঘুষ দিয়ে নানা ধরণের আইনবিরোধী, অসামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে দেশকে হুমকির মুখে
ঠেলে দেয়।
০৩. খাদ্যে ভিজাল মেশানোর মাধ্যমেও
চরম দুর্নীতিগ্রস্ত বাংলাদেশ। দুধের সাথে মেশানো হয় পানি, মেলামাইন; চাল-ডালের সাথে
মেশানো হয় নিম্নমানের চাল-ডাল, পাথরের গুড়া; ভোজ্য তেলের সাথে মেশানো হয় পোড়া মবিল।
০৪. সরকারি সেবা সংস্থাগুলোতে দুর্নীতি
ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ঘুষ ব্যতীত টেলিফোন, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির সংযোগ পাওয়া যায়
না। আবার অনেক বিল খেলাপি কর্মচারি কর্মকর্তাদের ঘুষ প্রদান করে বহাল তবিয়তে সরকারি
সেবা গ্রহণ করছে।
০৫. দুর্নীতির করাল গ্রাস থেকে দেশে
শিক্ষাব্যবস্থাও মুক্ত নয়। কিছু দুর্নীতিবাজ অসাধু শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে ভালোভাবে না
পড়িয়ে তার কাছে প্রাইভেট পড়াতে বাধ্য করেন। শিক্ষাব্যবস্থা সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরাও
আর্থিক দুর্নীতি করে চলেছে।
০৬. অবৈধ ব্যবসায়ী পণ্য মজুত করে কৃত্রিম
সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে দেয়। ফলে সাধারণ মানুষের ভোকান্তির শেষ
থাকে না।
৭. রাজনীতির ছত্র ছায়ায় এবং তাদের
আশ্রয়-প্রশ্রায়ে পেশি শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি করছে কতিপয় লোক।
৮. আইন আছে কিন্তু তার প্রয়োগ নেই।
তাই দুর্নীতি করেও কোনো শাস্তি হচ্ছে না বিধায় দুর্নীতি বেড়ে চলেছে।
৯. বিচারব্যবস্থা স্বাধীন না হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে অনেকে দুর্নীতি করে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে।
উপরে বর্ণিত বিষয়গুলোর প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখলে দুর্নীতির পরিমাণ অনেক কমতে পারে। তাই দুর্নীতির প্রতিকারেরর জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে:
০১. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অক্ষুন্ন
রাখতে হবে।
০২. দুর্নীতি দমন কমিশনকে সরকারি প্রভাব
মুক্ত রাখতে হবে।
০৩. বাজার তদারকির সার্বক্ষণিক ব্যবস্থা
রাখতে হবে।
০৪. শ্রেনিকক্ষে পাঠদান নিশ্চিত করতে
হবে।
০৫. সঠিক আয় অনুযায়ী কর প্রদান করতে
হবে।
০৬. ঋণখেলাপিদরে বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা
নিতে হবে।
০৭. দুর্নীতি প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন
গড়ে তুলতে হবে।
০৮. প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত
করতে হবে।
০৯. প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে র্দুনীতি
প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করতে হবে।
১০. দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে প্রচলিত আইনে শাস্তির বিধান করতে হবে।
উল্লেখিত সুপারিশসমূহ কার্যকর করলে দুর্নীতি অনেকাংশে হ্রাস পাবে। তাই এসব সুপারিশ কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
প্রতিবেদক-
মুমতারিন মালিহা
উজিরপুর, বরিশাল।
প্রেরক, মুমতারিন
মালিহা গ্রাম
+ পো: ডহরপাড়া উপজেলা:
উজিরপুর জেলা:
বরিশাল। |
ডাক টিকিট প্রাপক, সম্পাদক দৈনিক ইত্তেফাক, ১, রামকৃষ্ণ মিশন রোড, ঢাকা-১২০৫। |