বাংলার ইতিহাস এ দেশের মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস।
মূলভাব: বাঙালি জাতি গৌরবময় ইতিহাসে সমৃদ্ধ। কোনো অন্যায়ের সাথে আপোস করে না।
সম্পসারিত ভাব: বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবের ইতিহাস অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার ইতিহাস। এ জাতি কারও অধীনতা কোনো দিন মেনে নেয় নি। অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির অবস্থান চিরকালই ছিল বজ্রকঠিন। তাই এখানে বার বার বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে। দীর্ঘ দুইশ বছরের শাসন, শোষণ শেষে বাংলাকে পাকিস্তানের সাথে যুক্ত করে নামমাত্র স্বাধীনতা দেওয়া হয়। পাকিস্তানের বিমাতাসুলভ আচরণ বাঙালিদের অল্প পরেই মুক্তির জন্য সংগ্রামী করে তোলে। ১৯৫২ সালের রক্তঝরা ভাষা-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় মুক্তি-সংগ্রামের দিকে। ১৯৫৮ ও ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানি সামরিক শাসক বাংলার দামাল ছেলেদের ওপর গুলি চালায়। গুলি করে ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানেও। বারবার বাঙালির বুকের রক্তে রঞ্জিত হয় রাজপথ। তবুও তাদের স্বাধীনতার দাবিকে ঠেকাতে ব্যর্থ হয় পাকিস্তানি জান্তা-বাহিনী। তাই তারা ১৯৭১-এ বাঙালির ওপর চ’ড়ান্ত আঘাত হানে। তখন বাংলার মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তি-সংগ্রামে। বাঙালির বুকের তাজা রক্তে লাল হয় বাংলার মাটি।
মন্তব্য: লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে বাংলার স্বাধীনতা।
সঙ্গদোষে লোহা ভাসে।
মূলভাব: মানুষ যে সমাজের ওপর নির্ভর করে বসবাস করে সে সমাজে আছে নানা ধরনের লোক; ভালো আর মন্দ। সঙ্গ নির্বাচনে একমাত্র বিবেচনার দিক হল গুণী ব্যক্তি-যার সহায়তায় জীবন উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। সেখানে দুর্জন বা চরিত্রহীন মানুষকে জীবন ভর দূরে রাখতে হবে।
সম্প্রসারতি ভাব: মানুষের বড় গুণ তার চরিত্র। চরিত্রের গুণেই মানুষ শ্রেষ্ট আদর্শের মর্যাদা পায়। এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ঠিক রেখে অপরাপর বৈশিষ্ট্যের বিকাশ ঘটানো আবশ্যক। তাই কুসঙ্গ নয়, সৎসঙ্গের মধ্য দিয়ে নিজেকে বিকশিত করতে হবে। কুসঙ্গে মানুষ অমানুষ হয়ে ওঠে, তার সদগুণগুলো নষ্ট হয়ে যায়। সে হয়ে ওঠে পশুর মত অধম। জন্মগত ভাবেই মানুষ সত্যকে ভালোবাসে। আর অসৎ পথে যাওয়ার মূল কারণ অসৎসঙ্গ। অসৎসঙ্গের মধ্য দিয়ে মানুষের চরিত্র কুলষিত হয়। যেমন- রোহা ওজনে খুব ভারী বলে তা পানিতে ডুবে যায়। কিন্তু লোহা যদি হালকা কাঠ বা অসার কোনো পদার্থের সাথে বেঁধে দেওয়া যায়, তাহলে লোহা ভেসে ওঠে, ডুবে না। মানুষও অসৎ সঙ্গের প্রভাবে পাল্টে যায়। কুসঙ্গ চরিত্রহীনতার অন্যতম কারণ। অথচ চরিত্রের মাধ্যমেই ঘোষিত হয় মানুষের জীবনের গৌরব। চরিত্র দিয়ে সত্যিকার মানুষের গৌরবময় বৈশিষ্ট্য তা অন্য কিছু দিয়ে সম্ভব নয় বলে সবার ওপরে চরিত্রের সুমহান মর্যাদা স্বীকৃত। সমাজের মানুষের শ্রদ্ধা, ভারোবাসা পাওয়ার মূলে থাকে তার উত্তম চরিত্র। পরশ পাথরের স্পর্শে যেমন লোহা সোনায় পরিণত হয়, তেমনি সৎ সঙ্গে মানুষ উত্তম চরিত্রের অধিকারী হয়। আবার অসৎসঙ্গে মানুষ পশুর চেয়ে অধম হয়ে পড়ে।
মন্তব্য: এজগতে যত লোকের অধঃপতন হয়েছে তার অন্যতম কারণ অসৎসঙ্গ। তাই সঙ্গ নির্বাচনে আমাদের সর্তক হতে হবে।
No comments:
Post a Comment