শঙ্খমালা
- জীবনানন্দ দাশ---বনলতা সেন
কান্তারের
পথ ছেড়ে সন্ধ্যার আঁধারে
সে
কে এক নারী এসে ডাকিল আমারে,
বলিল,
তোমারে চাই:
বেতের
ফলের মতো নীলাভ ব্যথিত তোমার দুই চোখ
খুঁজেছি
নক্ষত্রে আমি- কুয়াশার পাখনায়-
সন্ধ্যার
নদীর জলে নামে যে আলোক
জোনাকির
দেহ হতে-খুজেছি তোমারে সেইখানে-
ধূসর
পেচার মতো ডানা মেলে অঘ্রাণের অন্ধকারে
ধানসিড়ি
বেয়ে-বেয়ে
সোনার
সিঁড়ির মতো ধানে আর ধানে
তোমারে
খুঁজছি আমি নির্জন পেঁচার মতো প্রাণে।
দেখিলাম
দেহ তার বিমর্ষ পাখির রঙে ভরা;
সন্ধ্যার
আঁধারে ভিজে শিরীষের ডালে যেই পাখি দেয় ধরা-
বাঁকা
চাঁদ থাকে যার মাথার উপর,
শিঙের
মতন বাঁকা নীল চাঁদ শোনে যার স্বর।
কড়ির
মতন সাদা মুখ তার;
দুইখানা
হাত তার হিম;
চোখে
তার হিজল কাঠের রক্তিম
চিতা
জ্বলে: দক্ষিণ শিয়রে মাথা শঙ্খমালা যেন পুড়ে যায়
সে
আগুনে হায়।
চোখে
তার
যেন
শত শতাব্দীর নীল অন্ধকার!
স্তন
তার
করুণ
শঙ্খের মতো – দুধে আর্দ্র-কবেকার শঙ্খিনীমালার!
এ
পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর।
No comments:
Post a Comment