অতিথি পাখি
প্রতি বছর শীতকালে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে অসংখ্য পাখি আমাদের দেশে আসে|এগুলো পরিযায়ী পাখি বা অতিথি পাখি হিসেবে পরিচিত| অতিথি পাখিরা শীতপ্রধান দেশ থেকে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে এদেশে আসে| প্রধানত সাইবেরিয়া, তিব্বত, হিমালয়ের পাদদেশসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে কয়েক মাসের জন্য আসে অতিথি পাখিরা| তীব্র শীতের প্রকোপ ও খাদ্যাভাব থেকে বাঁচার জন্য এদেশে আশ্রয় খুঁজে নেয় এরা| এসব পাখির মধ্যে অধিকাংশ জলচর| প্রাকৃতিক লীলা-বৈচিত্র্যের এদেশের ভারসাম্য রক্ষায় অতিথি পাখিদের অবদান অনেক| এই পাখিরা আমাদের দেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, এসব পাখি দেখার জন্য এদেশে আগমন ঘটে পর্যটকদের| ফলে অতিথি পাখিদের সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব| কিন্তু একশ্রেণীর অসাধু মাংসলোভী লোক এবং ব্যবসায়ী নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ সিদ্ধির জন্য এসব পাখি শিকার করে খায় এবং বিক্রি করে| ভাবতে অবাক লাগে যে, হাজার হাজার মাইল পথ অতিক্রম করে যে পাখিরা আসে অস্তিত্ব রক্ষার জন্য, তারাই তাদের অস্তিত্ব বিসর্জন দেয় হৃদয়হীন লোকদের খাবার টেবিলে| অথচ মানুষের কর্তব্য অতিথি পাখিদের অভ্যর্থনা জানানো| তাদের জন্য অভয়ারণ্য তৈরি করা| তাদের আশ্রয়কালীন সময়টুকু নিরাপদ ও আনন্দময় করে তোলা| এজন্য মানুষকে তার লোভ ও রসনা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে| বিচিত্র ধরনের এসব পাখি যেন কারও লোভের শিকার হতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে|প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন মানুষের আরো সজাগ ও সচেতন হওয়া|পাখিরা পাখনায় ভর করে যেসুদূরের গন্ধ নিয়ে আসে তাকে স্তব্ধ করার অধিকার কোনো সভ্য মানুষের নেই| তাই শীতের অতিথি পাখিদের সংরক্ষণের ব্যাপারে আমাদের সচেতন হতে হবে|একই সাথে শিকারিদের দমন করতে জরুরি ভিত্তিতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে|
No comments:
Post a Comment