নারী নির্যাতন
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ছাড়াও পৃথিবীতে নারী পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সনদ ও নীতিমালা রয়েছে। এই সনদগুলোর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নারীর অধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া। কিন্তু আমরা প্রতিনিয়ত নারী নির্যাতনের খবর পাই। যার ফলে নারীর মানবাধিকার খর্ব হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (২০১২) মতে, বাংলাদেশে প্রতি ঘন্টায় একজন করে নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। নারী নির্যাতনের মূল কারণ হচ্ছে পুরুষের তুলনায় নারী বা মেয়েদের নিম্ন সামাজিক মর্যাদা। এছাড়াও শিক্ষার অভাব, দারিদ্র, অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা, বিভিন্ন কুসংস্কার নারী নির্যাতনের কারণ।সমাজে নারী নির্যাতনের প্রভাব অনেক ক্ষতিকর যেমন- পারিবারিকভাবে নারী নির্যাতন হলে নির্যাতিত নারীর শারীরিক, মানসিক ক্ষতি হয়। যেসব পরিবারে মায়েরা নির্যাতনের শিকার হয় সেসব পরিবারে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধা পায়। নির্যাতিত নারী সময়মতো কাজে যেতে পারে না। ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। পারিবারিকভাবে নারী নির্যাতনের একটি বিশেষ কারণ হচ্ছে যৌতুক। যা একটি ব্যাধির মতো সমাজে ছড়িয়ে আছে। যৌতুক দিতে হয় বলে মেয়েশিশুকে পারিবারের বোঝা মনে করা হচ্ছে। রাস্তাঘাটে, বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথেও মেয়েরা নানা হয়রানির শিকার হচ্ছে। এধরনের নির্যাতনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সমাজের উপরই। যদি আমরা বাড়ি, বিদ্যালয় ও সবক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতা ও সম-অধিকার নিশ্চিত করার প্রতি যত্নবান হই তবে নারী নির্যাতনও বন্ধ হবে। তাই ছোটবেলা থেকেই কাউকে ছেলে বা কাউকে মেয়ে এভাবে না দেখে সবাইকে মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। সমাজের উন্নতির জন্য আমরা বাড়িতে মা-বাবাকে সাহায্য করব। কোন কাজ ছেলের বা কোন কাজ মেয়ের বলে মনে করব না। পরিবারের মা-বোন ইত্যাদি মেয়ে সদস্যদের প্রতি এবং পরিবারের বাইরে সকল মেয়েদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হব। নিজের কাজ নিজে করব। সহপাঠী ছেলে বা মেয়ে যেই হোক একসাথে পড়ালেখা করব, খেলা করব। বাড়িতে,বিদ্যালয়ে বা রাস্তাঘাটে কোন মেয়ে যাতে নির্যাতিত বা হয়রানির শিকার না হয়, তারা যেন নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে সে বিষয়ে আমরা সবসময় সচেতন থাকব। এভাবে ছেলেমেয়ে সকলে মিলেমিশে চলার মধ্য দিয়েই আমরা হতে পারি প্রকৃত মানুষ।
No comments:
Post a Comment