নারী শিক্ষা
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাধনায় ও কর্মজীবনে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের স্থান করে দিতে হবে। সমাজের ভারসাম্য ও স্থিতি নির্ভর করে নারী ও পুরুষের পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর। উচ্চশিক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও কর্মের ক্ষেত্রে নারীকে আসন দিতে হলে যে মানসিক প্রস্তুতি প্রয়োজন, সহশিক্ষা তার পথ নির্মাণ করবে। উচ্চশিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণের ফলে ইউরোপ ও আমাদের দেশে কখনো কখনো যে বিশৃঙ্খলা ও সামাজিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেনি তা নয়। কিন্তু এর জন্য নারী শিক্ষাকে দায়ী না করে ব্যক্তি ও তার পরিবেশকেই দায়ী করা উচিত। অনেকে মনে করে, নারী শিক্ষার ধুয়াটি নিতান্ত হাল আমলের সৃষ্টি। আসলে তা সত্য নয়। এই উপমহাদেশে প্রাচীন যুগেও নারী শিক্ষার প্রচলন ছিল। গুল বদন ও জেবুন্নিসার মতো বিদুষী মুঘল রমণীর গৌরবময় ইতিহাস সে কথাই মনে করিয়ে দেয়। ইসলাম নির্দেশিত পর্দাপ্রথা যখন অবরোধ ব্যবস্থায় পরিণত হলো, তখন থেকে মুসলিম নারীদের অধ্যয়নের পথ সংকুচিত হয়েছে। মনুর সমাজব্যবস্থা থেকেই কিন্তু নারী শিক্ষার পথ দুর্গম হয়ে ওঠে। ইংরেজ শাসনকালে শিক্ষা বিস্তারের জন্য যে আন্দোলন গড়ে ওঠে, তার ফলে নারী শিক্ষার পুনর্বিস্তার ঘটে। নারী শিক্ষা বিষয়ে সমাজের রক্ষণশীল মনোভাব আজ এক প্রকার পর্যুদস্ত হয়েছে বলা হয়। আমাদের দেশে নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অত্যধিক। দেশের অনগ্রসরতা দূর করার জন্য পুরুষের পাশাপাশি জনসংখ্যার অর্ধেক নারী সমাজকে যথার্থ কাজে লাগাতে হবে। তাই নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
No comments:
Post a Comment