চলমান কথা

গত ১১ মে, ২০২০ আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের অনলাইন পরীক্ষার শুভ উদ্বোধন করেন প্রকৌশলী এ এম এম সাজ্জাদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এপিএসসিএল।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু; স্বপ্ন হলো সত্যি। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সাথে স্বপ্ন যাবে বাড়ি।

Sunday, July 5, 2020

     #  পাপকে ঘৃণা কর, পাপীকে নয়

মানুষ ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ বা সৃষ্টির সেরা জীব। স্বীয় বিবেক-বুদ্ধি, মেধা-মননের গুণেই সে শ্রেষ্ঠ। কোনো মানুষই অপরাধী হয়ে পৃথিবীতে আসে না। প্রতিটি মানুষই নিষ্পাপ অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে। জন্মের পর বিরূপ পরিবেশ, নেতিবাচক পারিপার্শ্বিকতার প্রভাবে অনেক সময় তার বিবেক-বুদ্ধি, ন্যায়-অন্যায়, বিচারবোধ অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে। তখন সে পাপাচারে লিপ্ত হয়। মানুষের এই পাপকার্যে লিপ্ত হওয়ার পেছনে মুখ্যত সে নিজে দায়ী নয়।

তাই পাপকার্য ঘৃণিত ও বর্জনীয় হলেও পাপীকে বর্জন করা উচিত নয়। বরং তাকে কলুষতামুক্ত জীবনে ফিরে আসার সুযোগ দেয়া অন্য সকল মানুষেরই দায়িত্ব এবং কর্তব্য। পাপ এক ধরণের ব্যাধি। মানুষ রোগ-ব্যাধিকে ঘৃণা করলেও রোগাক্রান্ত মানুষকে ঘৃণা করে বর্জন করতে পারে না। পাপ ময়লা-আবর্জনা স্বরূপ। ময়লা-আবর্জনা ধারণকারী ডাস্টবিনকে কেউ সযত্নে ঘরে তুলে রাখে না। পাপরূপী আবর্জনাকে ধারণ করলেও মানুষ কিন্তু ডাস্টবিন নয়। ডাস্টবিন জন্ম থেকেই ডাস্টবিন। আর মানুষ জন্ম থেকেই মানুষ। আবর্জনা পরিষ্কার করলেও ডাস্টবিন গ্রহণীয় নয়।

কিন্তু মানুষ পাপমুক্ত হলে সভ্যসমাজে সাদরে গ্রহণীয়। দিনের পর দিন অপরাধ করলেও মহান স্রষ্টা তাঁর প্রিয় সৃষ্টি মানুষকে ঘৃণায় ছুঁড়ে ফেলেন না। আত্মশুদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে সুস্থ-সুন্দর জীবনে ফিরে আসার পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ দান করেন। ভয়ঙ্কর অপরাধীকেও অনুতপ্ত হয়ে আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করতে দেখা যায়। ইতিহাসে এরূপ বহু নজির আছে। বস্তুত পাপী বড় অসহায়, দুঃখী। তাকে ঘৃণায় দূরে ঠেলে দিলে সে আরও অপরাধপ্রবণ হয়ে পড়তে পারে। আলোকিত জীবনে ফিরে আসার সুযোগ না পেয়ে সে গভীর অন্ধকারে চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে।

শিক্ষা: পাপকাজ অবশ্যই ঘৃণিত ও পরিত্যাজ্য। কিন্তু পাপীকে ঘৃণায় দূরে না ঠেলে তাকে সংশোধনের সুযোগ দিতে হবে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে তাকে সহানুভূতির সঙ্গে সহায়তা করতে হবে।

     #  জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে

সৃষ্টিকর্তা এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। সবুজ শ্যামলে সুন্দর করে সাজিয়েছেন পৃথিবী। তবে তার সেরা সৃষ্টি হলাম আমরা মানুষ জাতি। তিনি আমাদেরকে জীবন দিয়েছেন। আমাদের জীবন বড় ক্ষণস্থায়ী আর তা আটকে আছে সুনির্দিষ্ট বাঁধাধরা কিছু নিয়মে। এই জীবনের আয়ু অসীম নয়, অনন্তকালের নয়; এর শেষ আছে। আমাদের জীবন অবিনশ্বর নয় বরং তা নশ্বর। জীবনের শুরু হয় জন্ম দিয়ে আর এর পরিসমাপ্তি ঘটে মৃত্যুর মাধ্যমে। যার জন্ম হয়েছে তার মৃত্যু নিশ্চিত।

পৃথিবীতে এমন কোনো সৃষ্টি নেই, যার জন্ম হয়েছে কিন্তু মৃত্যু হবে না। মৃত্যুকে থামানো যায় না বলেই মানুষ কখনো অমর হতে পারে না। মানুষের পঁচনশীল শরীর মৃত্যুর পর ধীরে ধীরে মিশে যায় পৃথিবীর মাটিতে। মানুষ হয়তো অন্যের স্মৃতিতে বেঁচে থাকতে পারে কিন্তু স্বশরীরে কেউ কোনোদিন অমর হতে পারে না। মানুষ মৃত্যুকে না চাইলেও মৃত্যুই মানুষকে কেঁড়ে নিয়ে যায় এই সুন্দর বসুধা থেকে। মৃত্যু কাউকে কখনো অমর হতে দেয় না। মৃত্যু প্রত্যেক জীবের জন্য অবধারিত সত্য।

সৃষ্টিকর্তা নির্দিষ্ট সময় বেধে দিয়ে মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। কখনোই এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেনি, ঘটে না আর ঘটবেও না। মানুষ পৃথিবী ছেড়ে চলে যায় কিন্তু অমর থেকে যায় কেবল তার সৃষ্টিকর্ম।

শিক্ষা: মানুষ মরণশীল, প্রতিনিয়ত সে মৃত্যুর দিকে ধাবমান। মৃত্যু এড়িয়ে অমর হওয়া তাই অসম্ভব।

No comments: