চলমান কথা

গত ১১ মে, ২০২০ আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের অনলাইন পরীক্ষার শুভ উদ্বোধন করেন প্রকৌশলী এ এম এম সাজ্জাদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এপিএসসিএল।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু; স্বপ্ন হলো সত্যি। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সাথে স্বপ্ন যাবে বাড়ি।

Sunday, July 5, 2020

    #   পথ পথিকের সৃষ্টি করে না, পথিকই পথের সৃষ্টি করে

পথ ও পথিক, এ দুটি আলাদা বস্তু হলেও পরস্পর অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। পথিক তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় নতুন পথ সৃষ্টি করে। মানুষ ঠিক একইভাবে তার চেষ্টা ও সাধনা দিয়ে জীবনে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়। মানুষের সৃষ্টিশীলতার মূলে নিহিত রয়েছে বিরামহীন অধ্যবসায় ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং ধৈর্য। তীব্র ইচ্ছা শক্তি আর প্রচেষ্টা দিয়ে মানুষ অসাধ্যকে জয় করতে পারে।

সৃজনশীল মানুষ তার চলার পথ নিজেই তৈরি করে নেয়। অন্যের পথে সে হাঁটে না। একটা লক্ষ্যকে সামনে রেখে তারা জীবনে অগ্রসর হতে চায়। প্রতি পদক্ষেপেই তারা একটা নতুন উপায়ের সন্ধান করে। আর জীবনে নানা ব্যর্থতা অতিক্রম করে একদিন সে ঠিকই তার লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথটি তৈরি করে নেয়। অন্যের প্রদর্শিত পথে অগ্রসর হওয়ার মধ্যে কোনো আনন্দ নেই, নেই কোনো গৌরব।

আর এ পথে কাঙ্ক্ষিত সফলতা অনেক সময়ই অর্জিত হয় না। তাই কৌতূহলী পথিক অবিরাম নতুন পথের সন্ধান করে। গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজন সঠিক পথ। এরকম অনেক পথই এ পৃথিবীতে তৈরি হয়ে আছে। কিন্তু প্রতিটি পথই যে মানুষকে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছে দিবে এমনটি নয়। কারণ প্রতিটি মানুষই একে অপরের থেকে পৃথক এবং তাদের মেধা ও চিন্তাশক্তিও পৃথক।

তাই গতানুগতিক পথে গন্তব্যে পৌঁছাতে চাইলে অনেককেই মাঝ পথে থেমে যেতে হয়। এমন দৃষ্টান্তের শেষ নেই। কারো অভিভাবক হয়তো আশা করে যে তাদের সন্তান ডাক্তার হবে। কিন্তু সন্তানটি হয়তো তার মেধা এবং সৃজনশীলতাকে বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে লাগাতে চায়। এ ক্ষেত্রে অভিভাবক যদি সন্তানের ওপর তাদের ইচ্ছাটাকে চাপিয়ে দেয় তবে দেখা যাবে যে সে মাঝপথেই থমকে গেছে। অন্যদিকে সে যদি নিজের মেধা ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে নিজ পথের সন্ধান করে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে তবে সে প্রকৃত অর্থেই সফল। এরকম প্রতিটি মানুষেরই সফলতার পথ আলাদা। তাই প্রকৃত পথিক প্রতিনিয়ত নতুন পথের সন্ধান করে।

শিক্ষা: অন্যের প্রদর্শিত পথ নয়, নিজের সৃষ্ট পথেই প্রতিটি মানুষ সফলতা অর্জন করে। তাই প্রতিটি মানুষেরই উচিত নতুন পথের সন্ধান করা এবং সে পথ ধরে এগিয়ে চলা।

# পুণ্য পাপে দুঃখে সুখে পতনে উত্থানে মানুষ হতে দাও তোমার সন্তানে

মানুষের জীবনে চলার পথ মসৃণ নয় বরং তা কাঁটায় ভরা। প্রতিটি পদে পদে রয়েছে কষ্ট-দুঃখ, বাধা-বিপত্তি, সংঘর্ষ, সংঘাত। প্রতিটি পদক্ষেপ সংগ্রামের। মানুষের জীবনে বেদনা আছে, কষ্ট আছে, অপমান আছে, ব্যর্থতা আছে, পরাজয় আছে।

এসব জীবনের অঙ্গ এবং বৈশিষ্ট্য। এই সকল বিরোধী শক্তির সাথে অত্যন্ত সহনশীলতা এবং নিষ্ঠার সাথে যুদ্ধ করে জয়ী হতে হয়। বাঁধাকে জয় করার মধ্যেই রয়েছে জীবনের তাৎপর্য। মানবজীবনের সার্থকতা লুকিয়ে থাকে বাধা জয়ের মধ্যে।

দুঃখ, কষ্ট, শোক, আঘাত মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকা মনুষ্যত্বকে জাগিয়ে তোলে। আগুনে পুড়ে সোনা যেমন খাঁটি হয়, তেমনি দুঃখ-দুর্দশার মধ্য দিয়ে একজন মানুষ জীবনের সকল বাধাকে জয় করার শক্তি অর্জন করে। মানুষের জীবন মানেই সংগ্রামের ইতিহাস।

পৃথিবীতে যুগে যুগে যোগ্যতম প্রাণীগুলো টিকে থাকতে পেরেছে কিন্তু দুর্বল প্রাণীগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে সংগ্রামের সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে। কেউ যদি জীবনে সফল একজন মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, তবে তাকে দুঃখ, কষ্ট, বেদনা, অপমান, পরাজয়ের স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। মনীষীদের জীবনী পাঠ করলে দেখা যায়, তারা কষ্ট, দুঃখ, সংগ্রাম, সংঘাতের মধ্য দিয়ে পথ চলেছেন। অনেক বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন।

কিন্তু তারা তাদের অটুট মনোবল এবং সাহসের মাধ্যমে সকল বাধাকে অতিক্রম করেছেন। সফলতার খাতায় নিজেদের নামকে লিপিবদ্ধ করেছেন। ইতিহাসের পাতায় নিজেদের নামকে অঙ্কিত করেছেন এবং হয়েছেন অনুকরণীয় চরিত্র।

শিক্ষা: জীবনে চলার পথে কঠিন বাস্তবতাকে মোকাবেলা করেই মানুষ, প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠে। মানুষের জীবনের পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটানোর জন্যে দুঃখ, কষ্ট, বেদনা, আঘাত, সংগ্রাম, উত্থান-পতন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

No comments: