চলমান কথা

গত ১১ মে, ২০২০ আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের অনলাইন পরীক্ষার শুভ উদ্বোধন করেন প্রকৌশলী এ এম এম সাজ্জাদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এপিএসসিএল।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু; স্বপ্ন হলো সত্যি। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সাথে স্বপ্ন যাবে বাড়ি।

Monday, July 6, 2020

      # মঙ্গল করিবার শক্তিই ধন, বিলাস ধন নহে।

মানুষের কঠোর পরিশ্রম ও ত্যাগের বিনিময়ে গড়ে উঠেছে আজকের সভ্যতা। তাই পৃথিবীর সকল ধন সম্পদে প্রত্যেক মানুষের অধিকার আছে। কিন্তু কোটি কোটি অসহায় মানুষকে বঞ্চিত করে কিছু মানুষ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। তারা আত্মসুখ, ভোগ, চিত্তবিনোদন ও বিলাসিতায় এই সম্পদের অপব্যবহার করে। তাই তাদেরকে প্রকৃত ধনী ও ক্ষমতাবান বলা যায় না।

প্রকৃত ধনী হতে হলে দেশ, সমাজ ও মানবকল্যাণে সম্পদ ব্যয় করার মহৎ চিন্তা থাকতে হবে। কেননা বিত্তবানের সম্পদের সার্থকতা নির্ভর করে সম্পদের সদ্ব্যবহারের ওপর। মহৎ ব্যক্তিরা সম্পদকে মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করে। তারা অসহায়কে সাহায্য করতে, আর্ত-পীড়িতদের সেবা করতে, দুঃস্থ মানবতার পাশে দাঁড়াতে সম্পদ ব্যয় করে। ব্যক্তি বিশেষের সুখভোগ ও বিলাসিতায় ব্যবহৃত ধন শুধু অপব্যয় নয়, তা সমাজে অকল্যাণ বয়ে আনে। পবিত্র কোরআনে আছে- ‘অপব্যয়কারী শয়তানের ভাই।

সম্পদশালীর অঢেল সম্পদ অর্জিত হয়েছে দরিদ্র-নিপীড়িত জনগণের শ্রমে। যে সমাজে মানুষ নিরন্ন ও নিরাশ্রয় অবস্থায় ধুকে মরে, বিনা চিকিৎসায় রোগযন্ত্রণায় ও ক্ষুধায় ছটফট করে, সেখানে বিলাসবহুল জীবনযাপন অন্যায়। এমন সমাজে মনুষ্যত্ব টিকে থাকতে পারে না। মানবকল্যাণ ও সমাজের অগ্রগতিতে সম্পদের ব্যবহারেই সম্পদের প্রকৃত মূল্যায়ন হয়।

ধনসম্পদ দুঃখী আর অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে যতো বেশি কাজে লাগে তার সার্থকতা ততো বেশি। প্রকৃত সম্পদশালী তার সঞ্চিত সম্পদ দেশ ও জাতির উন্নয়নে কাজে লাগায়। সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সাফল্য বয়ে আনে। অনেক মানুষ নিজের স্বার্থের কথা না ভেবে কেবল দরিদ্র, অসহায় ও আর্তপীড়িতদের কথা ভাবেন। মানুষের কল্যাণে তারা জীবন উৎসর্গ করতেও প্রস্তুত থাকেন। তাই অর্থ বিত্ত থাকলেই হবে না, মানুষের কল্যাণে তা ব্যয় করার ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে। মহৎ কাজে ধন সম্পদের ব্যবহার মানুষের মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটিয়ে জীবনকে সার্থক করে তোলে। শিক্ষা: সঞ্চিত ধন-সম্পদ আত্মসুখভোগ ও বিলাসিতায় অপব্যয় না করে মানবতার কল্যাণে ব্যয় করা প্রয়োজন। যে ধন মানবকল্যাণে ব্যয়িত হয় না সে ধনের কোনো মূল্য নেই।

 দন্ডিতের সাথে দন্ড-দাতা কাঁদে যবে সমান আঘাতে সর্বশ্রেষ্ঠ সে বিচার।

পাপ-পূণ্য নিয়েই মানুষের জীবন। যিনি ন্যায়বান তাকে সবাই পছন্দ করেন। অপরদিকে অন্যায়কারী ব্যক্তিকে তার অপরাধের জন্য বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। তাকে শাস্তি পেতে হয়। তবে অনেক সময় দেখা যায় বিচার সঠিক হয় না। আবার একজনের অপরাধে অন্যজন দন্ড প্রাপ্ত হয়। এক্ষেত্রে বিচারককে সুকঠিন ও অত্যন্ত বিচক্ষণ হতে হয়।

তিনি তার প্রজ্ঞা ও মেধার সাথে সহানুভূতি ও মমত্ববোধের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে দন্ড দান করবেন। দন্ডের ভয়ে অনেক সময় অপরাধী পাপকর্ম থেকে দূরে থাকে কিন্তু তার মানসিকতার পরিবর্তন হয় না। এ জন্য বিচারককে দয়া প্রদর্শন ও সহানুভূতির মাধ্যমে অপরাধীর বিবেককে জাগিয়ে তুলতে হবে এবং তাকে দন্ড দিতে হবে। বিচারক মানবিক বিবেচনা ও সাক্ষ্য প্রমাণের সমন্বয়ের মাধ্যমে বিচারকার্য করবেন। এতেই অপরাধীর অন্তরে অন্যায়ের প্রতি ঘৃণাবোধ জন্মাবে। অপরাধীকে শাস্তি নয় বরং তাকে সঠিক পথে আনাই বিচারকের মূল লক্ষ্য। এতে সমাজে অপরাধ কমে আসবে। শুধুমাত্র কঠোরতা নয় দয়া, মমত্ববোধ, নমনীয়তা প্রভৃতি বিষয়ের নিশ্চবয়তাই সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারের নিদর্শন।

শিক্ষা: পবিত্র বাইবেলে রয়েছে ‘পাপকে ঘৃণা করো, পাপীকে নয়’। তাই অপরাধীকে শুধু শাস্তি দিলেই দায়িত্ব শেষ হয় না। বরং তার ভেতরের মানুষটাকে সজাগ করে তার মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলাই সমাজ ও জাতির কর্তব্য।

No comments: