চলমান কথা

গত ১১ মে, ২০২০ আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের অনলাইন পরীক্ষার শুভ উদ্বোধন করেন প্রকৌশলী এ এম এম সাজ্জাদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এপিএসসিএল।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু; স্বপ্ন হলো সত্যি। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সাথে স্বপ্ন যাবে বাড়ি।

Monday, July 6, 2020

      #  রাত যত গভীর হয়, প্রভাত তত নিকটে আসে

জীবনের চলার পথে আসে অনেক বাধা-বিপত্তি। সেসব বাধাকে অতিক্রম করেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয়। নিরন্তর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বন্ধুর পথ ডিঙিয়ে সফলতার পানে এগিয়ে যাওয়াই জীবনের লক্ষ্য। অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে হলে সকল বাধা, ভয়কে অতিক্রম করেই করতে হয় সুখের সন্ধান। বিশ্বসংসারে সকল কিছু একটি নির্দিষ্ট নিয়মে পরিচালিত হয়। প্রাকৃতিক এই নিয়মে দিনের শেষে রাত, রাতের শেষে দিন আসে।

ঠিক তেমনি জীবন চলার পথে দুঃখ-বেদনা আসে। কিন্তু সুখের আগমনে জীবন আবার সজীব হয়ে ওঠে। পৃথিবী বিপরীতমুখী বস্তুর খেলায় প্রতিনিয়ত আবর্তিত। আলো-আঁধার, দিন-রাত, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, ভালো-মন্দ ইত্যাদি বিপরীতমুখী অনুষঙ্গ একটি অন্যটির সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রকৃতির এই বন্ধন পৃথিবীকে দিয়েছে টিকে থাকার মন্ত্রণা। একটির অর্বতমানে অপরটির অবস্থান স্পষ্ট হয়। পার্থিব জীবনেও এই সাদৃশ্য লক্ষণীয়। সফলতা-ব্যর্থতা, উত্থান-পতন, সুখ-দুঃখ পর্যায়ক্রমে জীবনে আসে।

আজ যারা সুখে জীবন-যাপন করছেন তাদের সুখ এসেছে নানা চড়াই-উতরাই পার হয়ে। এ জগতে কোনো কিছুই স্থায়ী হয় না। নিরবচ্ছিন্ন সুখ কিংবা নিরবচ্ছিন্ন দুঃখ সাধারণত পৃথিবীর কোথাও দেখা যায় না। তাদের পালাবদল ঘটে রাত-দিনের মতোই। রাত যদি দুঃখের প্রতীক হয় তাহলে সুখের প্রতীক হলো দিন। রাতের পর যেমন দিন আসে তেমনি দুঃখের পর আসে সুখ। তবে সুখের সন্ধান পেতে হলে দুঃখকে জয় করতে জানতে হয়। দুঃখ জীবনকে, হতাশাগ্রস্ত করে তোলে। চলার পথে বিপর্যয় সৃষ্টি করে।

পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে উদ্যমতার সঙ্গে এসব বাধাকে অতিক্রম করে সুখকে ছিনিয়ে আনতে হয়। দুঃখের অন্ধকার যতই গভীর হোক ধৈর্য, সহিষ্ণুতার মাধ্যমে তা জয় করা সম্ভব।

শিক্ষা: দুঃখ দেখে, পরাজয়কে দেখে ভয় পেলে চলবে না। মেধা-মননের সমন্বয়ে সাহসী উদ্যোগে জীবন-চলার পথকে মসৃণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে দুঃখের পরেই সুখ আর আনন্দ জীবনকে ছুঁয়ে যাবে।

# মোদের গরব মোদের আশা আ-মরি বাংলা ভাষা

প্রত্যেক দেশেরই একটি নিজস্ব ভাষা রয়েছে, যে ভাষায় সে দেশের মানুষ মনের ভাব প্রকাশ করে। তাই সম্পর্ক সৃষ্টির প্রধান মাধ্যম হলো ভাষা। জন্মের পর থেকে শিশু তার মায়ের মুখ থেকে আধো আধো করে যা বলতে শিখে তা হলো তার মায়ের ভাষা। বাংলা হলো আমাদের মায়ের ভাষা। আমাদের হাসি-কান্না, দুঃখ-বেদনা, ইচ্ছা-আকাক্সক্ষা সবকিছুর প্রকাশ ঘটে বাংলা ভাষার মাধ্যমে।

বাংলা ভাষার রয়েছে গৌরবোজ্জল ইতিহাস যা অন্য কোন জাতি বা গোষ্ঠীর মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় না। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোনো দেশ নেই যেখানে মানুষ ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে। কিন্তু বাঙালি এক জাতি যারা ভাষার জন্যে আন্দোলন করে জীবন দিয়েছে। ১৯৫২ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা করে এদেশের মানুষকে তা মেনে নিতে বাধ্য করেছিল। কিন্তু বাংলার ছাত্রসমাজ তথা আপামর জনতা তা মেনে নেয়নি।

ফলে ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে তার প্রতিবাদে মিছিল করতে গিয়ে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরসহ নাম না জানা অনেকেই প্রাণ দিয়েছে ভাষার জন্য। ফলে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠে। অবশেষে পাকিস্তানের সংবিধানে ১৯৬৫ সালে ২১৪ নং অনুচ্ছেদে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে ইউনেস্কো বাঙালিদের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর, ২১ শে ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করে। অতএব আন্দোলন সংগ্রামের ফলে বাংলা ভাষা স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আমাদের জাতীয় চেতনায়। তাই বাংলা ভাষা আমাদের আশা অকাঙ্ক্ষা ও গর্বের বিষয়।

শিক্ষা: বাংলা ভাষা আজ বিশ্বময় সমাদৃত। এ অর্জন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র মানচিত্রকে উজ্জ্বল করেছে। তাই ভাষার চেতনাকে জাগ্রত রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

No comments: