চলমান কথা

গত ১১ মে, ২০২০ আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের অনলাইন পরীক্ষার শুভ উদ্বোধন করেন প্রকৌশলী এ এম এম সাজ্জাদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এপিএসসিএল।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু; স্বপ্ন হলো সত্যি। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সাথে স্বপ্ন যাবে বাড়ি।

Friday, June 26, 2020

বাংলা কবিতার ছন্দ

# ছন্দ কাকে বলে? ছন্দ কত প্রকার ও কী কী? প্রত্যেক প্রকারের উদাহরণ সহ আলোচনা করা হল।

ছন্দ: কাব্যের রসঘন ও শ্রুতিমধুর বাক্যে সুশৃঙ্খল ধ্বনিবিন্যাসের ফলে যে সৌন্দর্য সৃষ্টি হয় তাকে ছন্দ বলে। (বাঙলা ছন্দ: জীবেন্দ্র সিংহরায়)

ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘বাক্যস্থিত পদগুলিকে যেভাবে সাজাইলে বাক্যটি শ্রুতিমধুর হয় ও তার মধ্যে ভাবগত, ধ্বনিগত সুষমা উপলব্ধ হয়, পদ সাজাইবার সেই পদ্ধতিকে ছন্দ বলে।

অর্থাৎ, কবি তার কবিতার ধ্বনিগুলোকে যে সুশৃঙ্খল বিন্যাসে বিন্যস্ত করে তাতে এক বিশেষ ধ্বনিসুষমা দান করেন, যার ফলে কবিতাটি পড়ার সময় পাঠক এক ধরনের ধ্বনিমাধুর্য উপভোগ করেন, ধ্বনির সেই সুশৃঙ্খল বিন্যাসকেই ছন্দ বলা হয়।

বাংলা ছন্দ মূলত ৩ প্রকার।

স্বরবৃত্ত ছন্দ: এ ছন্দটি ছড়ায় খুব বেশি ব্যবহৃত হয় বলে এটাকে ছড়ার ছন্দও বলা হয়। এতে সবসময় ৪ মাত্রার মূল পর্ব থাকে। বদ্ধস্বর ও মুক্তস্বর উভয়েই ১ মাত্রা হিসাবে গোনা হয়।

যে কবিতার মূল পর্ব সর্বদা ৪ মাত্রার হয়, তাকে স্বরবৃত্ত ছন্দ বলে। যেমন:
রাখাল ছেলে রাখাল ছেলে বারেক ফিরে চাও॥ ৪+৪+৪+২
বাঁকা গায়ের পথটি বেয়ে কোথায় চলে যাও?॥ ৪+৪+৪+২
–রাখাল ছেলে-জসীম উদদীন।

মাত্রাবৃত্ত ছন্দ: মূল পর্ব ৪, ৫, ৬ বা ৭ মাত্রার হয়। এই ছন্দে বদ্ধস্বর ২ মাত্রা এবং মুক্তস্বর ১ মাত্রা হিসাবে গণনা করা হয়। অর্থাৎ, অক্ষরের শেষে স্বরধ্বনি থাকলে ১ মাত্রা, আর অক্ষরের শেষে ব্যঞ্জনধ্বনি থাকলে, এমনকি ‘য়’ থাকলেও, ২ মাত্রা ধরা হয়।
যে কবিতার মূল পর্ব ৪, ৫, ৬ বা ৭ মাত্রার হয়, তাকে মাত্রাবৃত্ত ছন্দ বলে। যেমন:
এইখানে তোর দাদির কবর ডালিম-গাছের তলে ৬+৬+৬+২
তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে ৬+৬+৬+২ –কবর-জসীমউদদীন।

অক্ষরবৃত্ত ছন্দ: মূল পর্ব ৮ বা ১০ মাত্রার হয়। মুক্তস্বর, অর্থাৎ, অক্ষরের শেষে স্বরধ্বনি থাকলে ১ মাত্রা ধরা হয়। অক্ষরের শেষে ব্যঞ্জন ধ্বনি আছে, এমন অক্ষর শব্দের শেষে থাকলে ২ মাত্রা, আর শব্দের শুরুতে বা মাঝে থাকলে ১ মাত্রা গোনা হয়। তবে দুই বর্ণ বিশিষ্ট কোনো শব্দ বদ্ধস্বর হলে তা দুই মাত্রা ধরা হবে।
যে কবিতার মূল পর্ব ৮ বা ১০ মাত্রার হয়, তাকে অক্ষরবৃত্ত ছন্দ বলে। যেমন:
সতত, হে নদ তুমি পড় মোর মনে   8+6
সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে 8+6
কপোতাক্ষ নদ-মাইকেল মধুসূদন দত্ত।

No comments: