০৪. ন্যায়মূলক অলঙ্কার: বক্তব্যের
মধ্যে ন্যায়বাচক থাকলে এবং উক্তির ধারা বক্তব্যকে জোরালো করলে ন্যায়মূলক অলঙ্কার হয়।
যেমন:
চিরসুখীজন ভ্রমে কি কখন
ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে?
কি যাতনা বিষে বুঝিয়ে সে কিছে
কভু আশীবিষে দংশেনি যারে।
ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে?
কি যাতনা বিষে বুঝিয়ে সে কিছে
কভু আশীবিষে দংশেনি যারে।
এখানে চিরসুখী ভোলে না
আবার ব্যথিত জনই কেবল বেদনা বুঝতে পারে।
অর্থ ন্যায়মূল অলঙ্কার
দুই প্রকার: অর্থান্তরন্যাস ও কাব্যলিঙ্গ।
অর্থান্তরন্যাস: সামান্যের
দ্বারা বিশেষ অথবা বিশেষের দ্বারা সামান্য যখন সমন্বিত হয় এবং কাজের দ্বারা কারণ অথবা
কারণের দ্বারা যখন কাজ সমর্থিত হয়, তখন অর্থান্তরন্যাস অলঙ্কার হয়। যেমন-
চিরসুখীজন ভ্রমে কি কখন
ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে?
কি যাতনা বিষে বুঝিয়ে সে কিছে
কভু আশীবিষে দংশেনি যারে।
চিরসুখীজন ভ্রমে কি কখন
ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে?
কি যাতনা বিষে বুঝিয়ে সে কিছে
কভু আশীবিষে দংশেনি যারে।
এখানে চিরসুখী ভোলে না
আবার ব্যথিত জনই কেবল বেদনা বুঝতে পারে।
কাব্যলিঙ্গ: যখন কোন
পদের অথবা বাক্যের অর্থ ব্যঞ্জনার দ্বারা বর্ণনীয় বিষয়ের কারণ বলে মনে হবে, তখন কাব্যলিঙ্গ
অলঙ্কার হয়। যেমন: নির্ভর হৃদয়ে কহ, হনুমান আমি রঘুদাস, দয়াসিন্ধু রঘুকুলনিধি।
এখানে নির্ভর হৃদয় কারণ
রঘুদাস-দয়াসিন্ধু।
ন্যায়মূলক অলঙ্কার: বক্তব্যের
মধ্যে ন্যায়বাচক থাকলে এবং উক্তির ধারা বক্তব্যকে জোরালো করলে ন্যায়মূলক অলঙ্কার হয়।
অর্থ ন্যায়মূল অলঙ্কারের প্রকার: অর্থান্তরন্যাস, কাব্যলিঙ্গ, অনুমান, পরিবৃত্তি বা
বিনিময়, পর্যায় ও সমুচ্চয়।
অর্থান্তরন্যাস: সামান্যের
দ্বারা বিশেষ অথবা বিশেষের দ্বারা সামান্য যখন সমন্বিত হয় এবং কাজের দ্বারা কারণ অথবা
কারণের দ্বারা যখন কাজ সমর্থিত হয়, তখন অর্থান্তরন্যাস অলঙ্কার হয়। যেমন-
চিরসুখীজন ভ্রমে কি কখন
ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে?
কি যাতনা বিষে বুঝিয়ে সে কিছে
কভু আশীবিষে দংশেনি যারে।
চিরসুখীজন ভ্রমে কি কখন
ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে?
কি যাতনা বিষে বুঝিয়ে সে কিছে
কভু আশীবিষে দংশেনি যারে।
কাব্যলিঙ্গ: যখন কোন
পদের অথবা বাক্যের অর্থ ব্যঞ্জনার দ্বারা বর্ণনীয় বিষয়ের কারণ বলে মনে হবে, তখন কাব্যলিঙ্গ
অলঙ্কার হয়। যেমন- নির্ভর হৃদয়ে কহ, হনুমান আমি রঘুদাস, দয়াসিন্ধু রঘুকুলনিধি।
অনুমান: কারণের দ্বারা যখন জ্ঞানের উদয় হয়, তাকে
অনুমান অলঙ্কার বলে। যেমন:
সহসা বাতাস ফেলি গেল শ্বাস দুলাইয়া গাছে,
দুটি পাকা ফল লভিল ভূতল আমার কোলের কাছে।
ভাবিলাম মনে, বুঝি এতখনে আমারে চিনিল মাতা।
সেনএহর সে দানে বহু সম্মানে বারেক ঠেকানু
মাথা।।--রবীন্দ্রনাথ।
এখানে পাকা দুটি বাতাসে মাটিতে পড়ায় উপেন ভেবেছে
মাতা তাকে চিনতে পেরেছে।
পরিবৃত্তি বা বিনিময়: যেখানে
দুই বস্তুর বিনিময় কবি-কল্পনায় চমৎকৃতি লাভ হয় সেখানে পরিবৃত্তি বা বিনিময় অলঙ্কার
হয়। যেমন:
মানুষ কাউকে চায়-তার সেই
নিহিত উজ্জ্বল,
ঈশ্বরের পরিবর্তে অন্য
কোনো সাধনার ফল।–জীবনানন্দ দাশ।
পর্যায়: যদি একই বস্তু
একই সময়ে বহু স্থানে পতিত হয়, তবে তাকে পর্যায় অলঙ্কার বল। যেমন:
অঙ্গে অঙ্গে যৌবনের তরঙ্গ
উচ্ছল
লাবণ্যের মহামন্ত্রে স্থির
অচঞ্চল
বন্দী হয়ে আছে; তারি শিখরে
শিখরে
পড়িল মধ্যাহ্নরৌদ্র-ললাটে,
অধরে,
উরু-পরে কটিতটে, স্তনাগ্র
চূড়ায়,
বাহুযুগে, সিক্তদেহে রেখায়
রেখায়
ঝলকে ঝলকে। --রবীন্দ্রনাথ।
সমুচ্চয়: যেখানে কোনো একটি বিষয়ের জন্য একটি কারণ
যথেষ্ট হলেও একাধিক কারণের সমাবেশ ঘটানো হয়, সেখানে সমুচ্চয় অলঙ্কার হয়। যেমন:
প্রিয় তারে রাখিল না, রাজ্য
তারে ছেড়ে দিল পথ,
রুধিল না সমুদ্র পর্বত।–রবীন্দ্রনাথ।
এখানে ‘প্রিয় তারে রাখিল
না’ কারণ যথেষ্ট কিন্তু সেখানে রাজ্য পথ ছেড়ে দিল; সমুদ্র-পর্বত প্রতিরোধ সৃষ্টি করল
না।
No comments:
Post a Comment