০৩. শৃঙ্খলামূলক অলঙ্কার: অনেক
সময় বাক্য এমনভাবে সংযোজিত হয়, যাতে এক বাক্যের একটি কাজ অন্য বাক্যের কারণ হয়, সেই
কারণের কাজ আবার অন্য বাক্যের কারণ হয়। এই প্রেক্ষাপটে শৃঙ্খলামূলক অলঙ্কার তৈরি হয়।
কারণমালা, একাবলী ও সার এই তিন প্রকার শৃঙ্খলামূলক অলঙ্কার রয়েছে। যেমন:
লোভে পাপ পাপে মৃত্যু শাস্ত্রের
বচন।
অতএব কর সবে লোভ সন্বরণ।
এখানে ‘লোভ’ কার্যের কারণ
‘পাপ’; আবার ‘পাপ’ কার্যের কারণ মৃত্যু।
কারণমালা: কোনো কারণের
কাজ যদি পরের বাক্যে কারণরূপে প্রতিভাত হয় এবং এ কারণের কাজ আবার তার পরের বাক্যের
কারণ হয়ে ওঠে তবে কারণমালা অলঙ্কার হয়। যেমন:
ক. লোভে পাপ পাপে মৃত্যু শাস্ত্রের বচন।
ক. লোভে পাপ পাপে মৃত্যু শাস্ত্রের বচন।
অতএব কর সবে লোভ সন্বরণ।
এখানে ‘লোভ’ কার্যের কারণ
‘পাপ’; আবার ‘পাপ’ কার্যের কারণ মৃত্যু।
খ. থাকিলে বিজ্ঞের কাছে
হয় বিদ্যালয়।
বিদ্যা থেকে হয় অর্থ, অর্থে হয় বশ
অর্থ হতে কিনা হয়? পৃথিবী ও বশ!
বিদ্যা থেকে হয় অর্থ, অর্থে হয় বশ
অর্থ হতে কিনা হয়? পৃথিবী ও বশ!
এখানে ‘বিদ্যা’ কার্যের
কারণ ‘বিদ্যালয়’; আবার ‘বিদ্যা’ কার্যের কারণ ‘অর্থ’ আবার ‘অর্থ’ হয় ‘পৃথিবী’ বশ।
একাবলী: এই শৃঙ্খলাক্রমে
যখন একটি বাক্যের বিশেষ্যপদ তার আগের বিশেষণ রূপে বসে, তখন একাবলী অলঙ্কার হয়। যেমন:
ক. সুনীল আকাশ, স্নিগ্ধ
বাতাস, বিমল নদীর জল
গাছে গাছে ফুল, ভুলে ভুলে অলি সুন্দর ধরাতল।–যতীন্দ্রমোহন।
গাছে গাছে ফুল, ভুলে ভুলে অলি সুন্দর ধরাতল।–যতীন্দ্রমোহন।
এখানে গাছ, ফুল এবং অলি!
পূর্ববর্তী বিশেষ্য গাছ, পরবর্তী ফুলের বিশেষণ আবার এই ফুলই পরবর্তী পদ অলির বিশেষণ।
সার: আগে উল্লিখিত
পদার্থের চেয়ে যদি পরের বর্ণিত পদার্থের উৎকর্ষ বোঝানো হয়, তবে সার অলঙ্কার হয়। যেমন:
নিজের সে বিশ্বের সে, বিশ্বদেবতার
সন্তান নহে গো মাতা: সম্পত্তি তোমার।
সন্তান নহে গো মাতা: সম্পত্তি তোমার।
এখানে নিজের তারপর বিশ্বের;
তারপর বিশ্বদেবতার এভাবে উত্তর উত্তর উৎকর্ষ সাধিত হয়েছে।
তথ্যসূত্র: অলঙ্কার-অন্বেষা: নরেন বিশ্বাস।
No comments:
Post a Comment