চলমান কথা

গত ১১ মে, ২০২০ আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের অনলাইন পরীক্ষার শুভ উদ্বোধন করেন প্রকৌশলী এ এম এম সাজ্জাদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এপিএসসিএল।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু; স্বপ্ন হলো সত্যি। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সাথে স্বপ্ন যাবে বাড়ি।

Saturday, July 4, 2020

ব্যাকরণের প্রয়োজনীয় সংজ্ঞা

১. বর্ণ: ধ্বনিকে লিখে প্রকাশ করার চিহ্ন বা প্রতীককে ধ্বনি বলে।
২. ভাষা: ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ: মানবজাতি যে ধ্বনি বা ধ্বনি সকল দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করে তার নাম ভাষা।
৩. বাংলা ব্যাকরণ: যে শাস্ত্র জানা থাকলে বাংলা ভাষা শুদ্ধরূপে লিখতে, পড়তে ও বলতে পারা যায় তাকে ব্যাকরণ বলে।
৪. অঘোষ ধ্বনি: যে ধ্বনি উচ্চারণের স্বরতন্ত্রী কাঁপে না তাকে অঘোষ ধ্বনি বলে।
৫. ঘোষ ধ্বনি: যে ধ্বনি উচ্চারণের স্বরতন্ত্রী কাঁপে তাকে ঘোষ ধ্বনি বলে।
৬. অল্পপ্রাণ ধ্বনি: যে ধ্বনি উচ্চারণে ফুসফুস তাড়িত বাতাসের চাপ অল্প থাকে তাকে অল্পপ্রাণ ধ্বনি বলে।
৭. মহাপ্রাণ ধ্বনি: যে ধ্বনি উচ্চারণে ফুসফুস তাড়িত বাতাসের চাপ বেশি থাকে তাকে মহাপ্রাণ ধ্বনি বলে।
৮. অপিনিহিতি: শব্দ মধ্যস্থ ই বা উ আগে উচ্চারণ করার রীতিকে অপিনিহিতি বলে।
৯. উষ্ম বর্ণ: যে বর্ণ উচ্চারণের সময় যতক্ষণ ইচ্ছা শ্বাস ধরে রাখা যায় তাকে উষ্ম বর্ণ বলে।
১০. ধ্বনির পরিবর্তন: উচ্চারণের সময় সহজীকরণের প্রবণতায় শব্দের মূল ধ্বনির যে সব পরিবর্তন হয় তাকে বলে ধ্বনির পরিবর্তন।
১১. প্রাতিপদিক: বিভক্তিহীন নামবাচক শব্দকে প্রাতিপদিক বলে।
১২. ণত্ব বিধান: তৎসম শব্দে ণ ব্যবহারের নিয়মকে ণত্ব বিধান বলে।
১৩. ষত্ব বিধান: তৎসম শব্দে ষ ব্যবহারের নিয়মকে ষত্ব বিধান বলে।
১৪. সন্ধি: পাশাপাশি অবস্থিত দুটি ধ্বনির এক ধ্বনিতে পরিণত হওয়াকে সন্ধি বলে।
১৫. লিঙ্গ: শব্দের যে বৈশিষ্ট্য থেকে পুরুষ, স্ত্রী বা ক্লীব বোঝা যায় তাকে লিঙ্গ বলে।
১৬. সংখ্যাবাচক শব্দ: যে শব্দে ব্যক্তি, বস্তু বা প্রাণীর সংখ্যার ধারণা জন্মে তাকে সংখ্যাবাচক শব্দ বলে।
১৭. দিরুক্ত শব্দ বা শব্দ দ্বৈত: একই শব্দ যখন দুই বার উচ্চারিত হয়ে পৃথক পৃথক অর্থ প্রকাশ করে তখন তাকে দিরুক্ত শব্দ বা শব্দ দ্বৈত বলে।
১৮. বচন: ব্যাকরণে বিশেষ্য বা সর্বনামের সংখ্যাগত ধারণা প্রকাশের উপায়কে বচন বলে।
১৯. সমাস: অর্থ সম্বন্ধ আছে এমন দুই বা বহুপদ একটি পদে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে সমাস বলে।
২০. উপসর্গ: শব্দ বা ধাতুর পূর্বে কতিপয় সুনির্দিষ্ট অব্যয় জাতীয় শব্দাংশ যুক্ত হয়ে সাধিত শব্দের অর্থের পরিবর্তন, সম্প্রসারণ বা সংকোচন ঘটিয়ে থাকে, তাকে উপসর্গ বলে।
২১. ক্রিয়াপদ: বাক্যের অন্তর্গত কার্য-বোধক পদকে বলা হয় ক্রিয়াপদ।
২২. পুরুষ: শব্দের যে বৈশিষ্ট্য দিয়ে বক্তা, শ্রোতা বা বস্তুকে নির্দেশ করা হয় তাকে শব্দের পুরুষ বলে।
২৩. ক্রিয়া বিভক্তি: কাল ও পুরুষ অনুসারে যে বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি ধাতুর পরে যুক্ত হয়ে সমাপিকা ক্রিয়া গঠন করে, সেই বর্ণ বা বর্ণ সমষ্টিকে ক্রিয়া বিভক্তি বলে।
২৪. অনুজ্ঞা পদ: আদেশ, নিষেধ, অনুরোধ, প্রার্থণা, অনুনয়, অনুমতি প্রভৃতি অর্থে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কালের মধ্যম পুরুষের ক্রিয়াপদের রূপকে অনুজ্ঞা পদ বলে।
২৫. কারক: বাক্যস্থিত ক্রিয়া পদের সঙ্গে নাম পদের যে সম্পর্ক, তাকে কারক বলে।
২৬. অনুসর্গ: যে সকল অব্যয় বাচক শব্দ বিশেষ্য বা সর্বণামের পরে বসে কারক ও বিভক্তি সূচিত করে তাদের কে অনুসর্গ বলে।
২৭. অনুকার অব্যয়: যে সকল অব্যয় দ্বারা অব্যক্ত শব্দ অনুকরণ করা হয় তাদের অনুকার অব্যয় বলে।
২৮. অনন্বয়ী অব্যয়: বাক্যে কোন পদের সাথে কোন প্রকার সম্পর্ক না রেখে বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে এমন অব্যয়ের নাম অনন্বয়ী অব্যয়।
২৯. অভিধা: শব্দের যে শক্তি দ্বারা তার ব্যাকরণ ও অভিধান সম্মত মূল অর্থ বোঝা যায়, তাকে অভিধা বলে।
৩০.অকর্মক ক্রিয়া: যে ক্রিয়ার কোন কর্ম নেই তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে।
৩১. অসমাপিকা ক্রিয়া: যে ক্রিয়া বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ করতে পারে না, অন্য ক্রিয়ার সাহায্য দারকার হয় তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে।
৩২. সমাপিকা ক্রিয়া: যে ক্রিয়া বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ করতে পারে তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে।
৩৩. তৎসম শব্দ: যে সব শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে কোন রূপ পরিবর্তন ছাড়াই বাংলা ভাষায় এসেছে তাদেরকে তৎসম শব্দ বলে।
৩৪. অর্ধ-তৎসম শব্দ: যে সব সংস্কৃত শব্দ কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে বাংলা ভাষায় এসেছে তাদেরকে অর্ধ-তৎসম শব্দ বলে।
৩৫. তদ্ভব শব্দ: যে সব শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে প্রাকৃত ভাষার মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষায় এসেছে সে সব শব্দকে তদ্ভব শব্দ বলে।
৩৬. কৃদন্ত পদ: কৃৎ প্রত্যয় যোগে গঠিত শব্দকে কৃদন্ত পদ বলে।
৩৭. ক্রিয়া বিভক্তি: ক্রিয়ামূল বা ধাতুর সাথে যে বিভক্তি যুক্ত হয় তাকে ক্রিয়া বিভক্তি বলে।
৩৮. শব্দ বিভক্তি: নামবাচক শব্দের সাথে যে বিভক্তি যুক্ত হয় তাকে শব্দ বিভক্তি বলে।
৩৯. শব্দ: বাকযন্ত্রসৃষ্ট অর্থবোধক ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টিকে শব্দ বলে।
৪০. উপধা: প্রকৃতির অন্ত বর্ণের পূর্ব বর্ণকে উপধা বলে।
৪১. কৃৎ প্রত্যয়: ক্রিয়ামূল বা ধাতুর পরে যে অর্থহীন বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাকে কৃৎ প্রত্যয় বলে।
৪২. তদ্ধিত প্রত্যয়: শব্দের পরে যে অর্থহীন বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাকে তদ্ধিত প্রত্যয় বলে।
৪৩. প্রত্যয়: ধাতু বা শব্দের পরে যে অর্থহীন বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাকে প্রত্যয় বলে।
৪৪. অব্যয়: লিঙ্গ, বচন ও পুরুষভেদে যে পদ গুলোর কোন রূপান্তর হয় না সেগুলোকে অব্যয় বলে।
৪৫. অক্ষর: শব্দের যে অংশটুকু একবারে উচ্চারণ করা যায় তাই অক্ষর।
৪৬. দ্বিকর্মক ক্রিয়া: যে ক্রিয়ার দুটো কর্ম থাকে, দ্বিকর্মক ক্রিয়া তাকে বলে।
৪৭. গৌণ কর্ম: দ্বিকর্মক ক্রিয়ার প্রাণীবাচক কর্মকে গৌণ কর্ম বলে।
৪৮. মুখ্য কর্ম: দ্বিকর্মক ক্রিয়ার বস্তুবাচক কর্মকে মুখ্য কর্ম বলে।
৪৯. প্রযোজক ক্রিয়া: যে কর্তা নিজে না করে অন্য কে দিয়ে ক্রিয়া সম্পাদন করালে তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে।
৫০. পদাশ্রিত নির্দেশক: বিশেষ্য বা সংখ্যাবাচক বিশেষণকে বিশেষভাবে নির্দেশ করার জন্য কতগুলো শব্দ নির্দেশবাচক প্রত্যয়রূপে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয় সেগুলোকে পদাশ্রিত নির্দেশক বলে।
৫১. প্রকৃতি: শব্দ ও ক্রিয়ার মূলকে প্রকৃতি বলে।
৫২. নাম প্রকৃতি: শব্দের মূলকে নাম প্রকৃতি বলে।
৫৩. ক্রিয়া প্রকৃতি: ক্রিয়ার মূলকে ক্রিয়া প্রকৃতি বলে।
৫৪. ণিজন্ত ধাতু: মৌলিক ধাতুর সাথে আ বা ওয়া যুক্ত হয়ে গঠিত ধাতুকে ণিজন্ত ধাতু বলে।
৫৫. সমধাতুজ বা ধাত্বর্থক কর্ম: বাক্যস্থিত ক্রিয়া ও কর্মপদ একই ধাতু থেকে উৎপন্ন হলে তাকে সমধাতুজ বা ধাত্বর্থক কর্ম বলে।
৫৬. মৌলিক শব্দ: যে সব শব্দকে বিশ্লেষণ করা যায় না তাকে মৌলিক শব্দ বলে।
৫৭. সাধিত শব্দ: মৌলিক শব্দ ব্যতীত সব শব্দকে সাধিত শব্দ বলে।
৫৮. ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞা: ভবিষ্যতে কোন ক্রিয়া বা কাজ করার জন্য আদেশ, উপদেশ, অনুরোধ, নিষেধ বুঝালে ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞা কাল বলে।
৫৯.বর্তমান অনুজ্ঞা: বর্তমানে কোন ক্রিয়া বা কাজ করার জন্য আদেশ, উপদেশ, অনুরোধ, নিষেধ বুঝালে বর্তমান অনুজ্ঞা কাল বলে।
৬০. ব্যতিহার কর্তা: দুটি কর্তা পারস্পরিক অর্থে ক্রিয়া সম্পাদন করলে তাকে ব্যতিহার কর্তা বলে।
৬১. বিভক্তি: বাক্যের অন্তর্গত শব্দের শেষে যে সব বর্ণ বা বর্ণগুচ্ছ বসে বাক্যের অপরাপর শব্দের সাথে অন্বয় সাধন করে সেগুলোকে বিভক্তি বলে।
 ৬২. সকর্মক ক্রিয়া: যে ক্রিয়ার কোন কর্ম আছে তাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে।
৬৩. যোগরূঢ় শব্দ: সমাস নিস্পন্ন যে সব শব্দ সমস্যমান পদের অর্থ না বুঝিয়ে অন্য কোন বিশেষ অর্থ বোঝায় তাকে যোগরূঢ় শব্দ বলে।
৬৪. রূঢ়ি শব্দ: প্রত্যয় ও উপসর্গযোগে গঠিত যেসব শব্দ প্রত্যয় ও উপসর্গের অর্থ না বুঝিয়ে বিশেষ কোন অর্থ বুঝায় তাকে রূঢ়ি শব্দ বলে।
৬৫. বাক্য সংক্ষেপণ: ভাষা বিজ্ঞানে ক্রমাগত গবেষণা ও অনুশীলনের ফলে প্রত্যয়, উপসর্গ, সমাস ইত্যাদির সাহায্যে নিষ্পন্ন, সংকোচিত করে সহজতর উপায় এবং সল্প উচ্চারণের মাধ্যমে মনোভাব প্রকাশের উপায় সাধিত হয়। এই উপায়কে বাক্য সংক্ষেপণ বলে।

No comments: